কর্মস্থলে ডায়াবেটিস, মেনে চলুন ৫ পরামর্শ
জীবনযাপন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫:৩৯, ১৪ নভেম্বর ২০২৫
ছবি: ফাইলফটো
আজ বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘কর্মস্থলে ডায়াবেটিস সচেতনতা গড়ে তুলুন’।
এ অবস্থায় দেশের মানুষকে কর্মস্থলে ডায়াবেটিস ঝুঁকিমুক্ত থাকতে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান ও মহাসচিব মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন পাঁচটি পরামর্শ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে তুলে ধরেছেন কর্মস্থলে ডায়াবেটিসের কারণ ও প্রতিকার।
তারা জানিয়েছেন, সারা বিশ্বেই ডায়াবেটিস মহামারী আকার ধারণ করেছে। ডায়াবেটিস কেবল একজন ব্যক্তির নয়, এটি কর্মক্ষেত্রের উৎপাদনশীলতার ওপরও প্রভাব ফেলে। কর্মস্থল এমন একটি জায়গা, যেখানে প্রাপ্তবয়স্করা জীবনের উল্লেখযোগ্য সময় কাটান। কর্মস্থলে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে কাজ করা, কম শারীরিক পরিশ্রম, মানসিক চাপ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। মানসিক চাপ বেশি হলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়।
এই দুই বিশেষজ্ঞ আরও জানান, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির শারীরিক স্বাস্থ্য সমস্যার পাশাপাশি তার কর্মক্ষমতার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পরে। ফলে কর্মক্ষেত্রের উৎপাদনশীলতা হ্রাস পায়।
তারা জানান, কর্মস্থলে ডায়াবেটিস সচেতনতা গড়ে তুললে, স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করা গেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়, কর্মীদের কাজের মান উন্নত হয় এবং কর্মক্ষেত্রের উৎপাদনশীতাও বৃদ্ধি পায়।
একই সঙ্গে, যাদের ডায়াবেটিস নেই, ডায়াবেটিস বিষয়ক সচেতনতা কর্মস্থলে থাকা অন্য কর্মীদেরকেও ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত রাখতে সাহায্য করবে। তাই কর্মস্থলে ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলা আবশ্যক।
ডায়াবেটিসের কারণ:
বিশেষজ্ঞদের মতে, মানসিক চাপে থাকলে, অতিরিক্ত ফাস্টফুড ও চর্বিযুক্ত খাবার খেলে, শারীরিক পরিশ্রম না করলে, নিয়মিত শরীরচর্চা না করলে, স্বাভাবিকের চাইতে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বেড়ে গেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়। আর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে হার্ট এ্যাটাক, স্ট্রোক, কিডনি ফেইলিওর, অন্ধত্ব ও অঙ্গচ্ছেদের মতো মারাত্মক এবং প্রাণঘাতী ঝুঁকি থাকে। এ অবস্থায় নিয়মিত ব্যায়াম করা, মানসিক চাপমুক্ত থাকা, সুষম খাদ্য খাওয়া, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ ও ইনসুলিন গ্রহণ করা, সুশৃক্সখল জীবনযাপন করা প্রয়োজন।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি সম্পর্কে এ ধরনের সচেতনতা কর্মস্থলে থাকা কর্মীদেরকেও ডায়াবেটিস সুনিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং যাদের ডায়াবেটিস নেই তাদের ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। এছাড়াও ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের প্রতি অন্য কর্মীদের উচিত সহানুভূতিশীল আচরণ করা এবং প্রয়োজনে সহায়তা করা। আমাদের মনে রাখতে হবে, স্বাস্থ্যকর কর্মস্থলই উৎপাদনশীল কর্মস্থল।
কর্মস্থলে পাঁচ পরামর্শ:
ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও নিচের ব্যবস্থাগুলো নিতে পারে-
১. কর্মীদের জন্য বছরে অন্তত একবার রক্তে শর্করা, রক্তচাপ ও বিএমআই পরিমাপের ব্যবস্থা করা।
২. অফিস ক্যান্টিনে কম চর্বি ও উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার রাখা এবং চা-কফিতে চিনির ব্যবহার কম রাখা।
৩. কর্মীদের জন্য কাউন্সিলিং ও বিশ্রামের ব্যবস্থা রাখা।
৪. অফিসে কাজের ফাঁকে ফাঁকে একটু হাঁটাহাঁটি করা এবং লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করা।
৫. ডায়াবেটিস প্রতিরোধ, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনের পরিবর্তন সম্পর্কে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া।
