লন্ডনের নার্সারিতে হ্যাকারদের হামলা
যুক্তরাজ্যে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে তীব্র উদ্বেগ
প্রযুক্তি ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭:১৩, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

লন্ডনে শিশু পরিচর্যা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান কিডো ইন্টারন্যাশনাল বড় ধরনের সাইবার হামলার শিকার হয়েছে। হ্যাকারদের একটি দল প্রায় ৮ হাজার শিশুর ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করেছে। চুরি হওয়া তথ্যের মধ্যে রয়েছে শিশুদের নাম, ছবি, বাসার ঠিকানা এবং পরিবারের যোগাযোগের তথ্য। খবর রয়টার্স।
‘রেডিয়ান্ট’ নামের হ্যাকার দলটি তাদের অবস্থান রাশিয়ায় বলে দাবি করেছে। প্রমাণস্বরূপ তারা ইতোমধ্যে ১০ জন শিশুর পূর্ণাঙ্গ তথ্য ডার্ক ওয়েবে প্রকাশ করেছে। শুধু তাই নয়, হ্যাকাররা হুমকি দিয়েছে— প্রতিটি শিশুর ৩০টি করে প্রোফাইল এবং প্রায় ১০০ কর্মচারীর তথ্য তারা ফাঁস করতে পারে।
লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি এখনো তদন্তাধীন রয়েছে। মামলাটি সাইবার ক্রাইম ইউনিট দেখছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিষয়টি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।
যুক্তরাজ্যের জাতীয় সাইবার সিকিউরিটি সেন্টারের প্রধান জনাথন এলিসন এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “যারা শিশুদের যত্ন নেন, তাদের লক্ষ্য করে এ ধরনের হামলা বিশেষভাবে নিন্দনীয়।”
সাম্প্রতিক সাইবার হামলার ধারাবাহিকতা
এ ঘটনা যুক্তরাজ্যে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া একাধিক বড় সাইবার হামলার মধ্যে নতুন সংযোজন।
চলতি বছরের এপ্রিলে ‘স্ক্যাটারড স্পাইডার’ নামের একটি হ্যাকার গ্রুপ খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সার হ্যাক করেছিল। এতে প্রতিষ্ঠানটি কয়েক সপ্তাহ অনলাইন অর্ডার নিতে ব্যর্থ হয় এবং প্রায় ৩০ কোটি পাউন্ড লোকসানের মুখে পড়ে।
গত মাসে কলিন্স এয়্যারস্পেসের বিরুদ্ধে র্যানসমওয়্যার হামলার পর একজনকে গ্রেফতার করা হয়। ওই ঘটনায় লন্ডন হিথরো বিমানবন্দরের স্বয়ংক্রিয় চেক-ইন সিস্টেমের মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয় এবং ইউরোপজুড়ে ভ্রমণ বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।
সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার ও কলিন্স এয়্যারস্পেস–এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসায় ক্ষতি হওয়ায় আর্থিক সহায়তার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাজ্য সরকার।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিজিটাল যুগে সংবেদনশীল তথ্যের সুরক্ষা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যথাযথ সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নিলে এই ধরনের হামলা আরও বাড়বে।
কিডো ইন্টারন্যাশনাল এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তবে হামলার পর অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।