ভারত উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক চায় না, ড. ইউনূসকে রাজনাথ
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ২০:১৪, ৮ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ২০:৩৯, ৮ নভেম্বর ২০২৫
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। ছবি: হিন্দুস্তান টাইমস
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত সম্পর্কের টানাপড়েন চায় না বলে জানিয়েছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘কথা বলার ক্ষেত্রে মনোযোগী হওয়ার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
ভারতের নেটওয়ার্ক১৮ গ্রুপের প্রধান সম্পাদক রাহুল যোশীকে দেওয়া একান্ত আলাপনে রাজনাথ সিং এ কথা বলেন। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) এই গ্রুপের সংবাদমাধ্যম ফার্স্টপোস্টের প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
রাজনাথ সিং বলেন, নয়াদিল্লি বাংলাদেশের সঙ্গে ‘উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক’ চায় না এবং অধ্যাপক ইউনূসের উচিত, তিনি কী বলছেন, সে বিষয়ে সতর্ক থাকা।
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ভারত যেকোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম, যদিও আমাদের লক্ষ্য প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা।’
সমাজকালের পাঠকের সুবিধার্থে ফার্স্টপোস্টের প্রতিবেদনের বাংলা অনুবাদ দেওয়া হলো—
“ইউনূসের কথার দিকে নজর দেওয়া উচিত: রাজনাথ সিং বলেছেন, ভারত বাংলাদেশের সাথে ঝগড়া চায় না
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে এবং অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে তার বক্তব্যে সংযম দেখাতে হবে।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর ২০২৫) নেটওয়ার্ক১৮ গ্রুপের প্রধান সম্পাদক রাহুল জোশির সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় রাজনাথ সিং এসব কথা বলেন।
রাজনাথ সিং বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো টানাপড়েন চাই না, তবে ইউনূসকে তার বক্তব্য নিয়ে সাবধান হতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারত যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম, কিন্তু আমরা প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাই।’
শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর বাংলাদেশে যে সহিংস আন্দোলনের সূত্রপাত হয়, তার পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশের মধ্যে টানাপড়েন বাড়তে শুরু করে। নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন।
প্রতিবেদন অনুসারে, সম্প্রতি ড. ইউনূস পাকিস্তানের যৌথ প্রধান সেনাপতি কমিটির চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা এবং ঢাকায় সফররত তুরস্কের পার্লামেন্টের প্রতিনিধি দলের কাছে ‘আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি শিল্পগ্রন্থ উপহার দেন।
বাংলাদেশের দৈনিক দ্য ঢাকা ট্রিবিউন জানায়, বইটিতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ছাত্র আন্দোলনের সময় তরুণদের তৈরি করা দেয়ালচিত্র ও গ্রাফিতি। তবে নিউজ১৮-এর এক প্রতিবেদন দাবি করেছে, বইটির চিত্রগুলোতে একটি বিতর্কিত ধারণা—‘গ্রেটার বাংলাদেশ’ পরিকল্পনা—প্রকাশ পেয়েছে, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, বিশেষ করে আসাম, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক প্রভাবক্ষেত্র হিসেবে দেখানো হয়েছে।
অজ্ঞাত সূত্রের বরাতে নিউজ১৮ জানায়, বইটিতে কথিতভাবে কিছু ‘যুদ্ধ পরিকল্পনা’ ও ‘বিজয়োত্তর ব্যবস্থাপনা কাঠামো’-এর উল্লেখ রয়েছে, যার উদ্দেশ্য ছিল আসামকে ‘ঢাকার নিয়ন্ত্রণে একটি উৎপাদনশীল অঞ্চল’ হিসেবে কল্পনা করা।
সূত্রটি আরও দাবি করে, ‘এটি কেবল একটি শিল্পকর্ম ছিল না; বরং একটি বার্তা—যা নির্দিষ্ট আন্তর্জাতিক ইসলামি নেটওয়ার্কের উদ্দেশে পাঠানো হয়েছে, যারা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে একটি বৃহত্তর কৌশলগত জোটের অংশ হিসেবে দেখে।’
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ড. ইউনূসের সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্য ও প্রতীকী কর্মকাণ্ড দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ককে জটিল করে তুলেছে। ভারতের পররাষ্ট্রমহল এসব ঘটনাকে ঘিরে নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।”
