লেবাননের দক্ষিণে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১২:৫৯, ৭ নভেম্বর ২০২৫
লেবাননে হামলায় পরিস্থিতি , ছবি : বিবিসি
লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে আবারও রক্তক্ষয়ী বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাতভর চলা এই অভিযানে অন্তত একজন নিহত ও নয়জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। হামলায় একাধিক বেসামরিক স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে, যার ফলে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্ত।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, তাদের হামলার লক্ষ্য ছিল লেবাননের হিজবুল্লাহর সামরিক ঘাঁটি ও অস্ত্র মজুদের স্থান। দক্ষিণ লেবাননের আয়তা আল-জাবাল, তায়বেহ, তায়ের দেব্বা ও জাওতার-আল-শারকিয়া শহরে এই হামলা চালানো হয়। হামলার আগে স্থানীয় বাসিন্দাদের ওই অঞ্চল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলেও জানিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
তবে লেবাননের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানায়, হামলাগুলো মূলত বেসামরিক এলাকায় হয়েছে—যেখানে কোনো সামরিক স্থাপনা ছিল না। এতে সাধারণ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আজকের হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ইসরাইল আমাদের দেশের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিচ্ছে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর থাকলেও ইসরায়েল তা নিয়মিতভাবে লঙ্ঘন করছে এবং কোনো রাজনৈতিক সমাধানে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
ইসরায়েলি হামলার পর হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা এখনো যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ, তবে আত্মরক্ষার জন্য প্রতিক্রিয়া জানানো হবে। সংগঠনটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে,
“যে শত্রু আমাদের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিচ্ছে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া আমাদের বৈধ অধিকার।”
হিজবুল্লাহর সামরিক শাখা রেদওয়ান ফোর্স-এর এক কমান্ডার এই হামলায় নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে স্থানীয় সূত্র।
২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হলে হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে সীমান্তে ইসরায়েলিবাহিনীর ওপর আক্রমণ চালায় হিজবুল্লাহ। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে সংঘাতটি পূর্ণমাত্রায় রূপ নেয়। পরের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও ইসরাইল প্রায় প্রতিদিনই সীমান্তে হামলা চালাচ্ছে।
চলতি বছরের জানুয়ারির মধ্যে দক্ষিণ লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহারের কথা থাকলেও ইসরাইল এখনো পাঁচটি সীমান্ত চৌকিতে অবস্থান বজায় রেখেছে।
সূত্র: আলজাজিরা, টাইমস অব ইসরাইল
