বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫

| ১২ ভাদ্র ১৪৩২

নতুন প্রজাতি : পিঠে পালক সদৃশ নৌকার পাল-আকৃতি গঠন

সমাজকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬:১৮, ২৫ আগস্ট ২০২৫ | আপডেট: ১৬:১৮, ২৫ আগস্ট ২০২৫

নতুন প্রজাতি : পিঠে পালক সদৃশ নৌকার পাল-আকৃতি গঠন

লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম শুক্রবার ঘোষণা করেছে যে, প্যালিয়নটোলজিস্টরা একটি নতুন ডাইনোসর প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন, যার পিঠজুড়ে ছিল একেবারেই আলাদা বৈশিষ্ট্য—পাল সদৃশ উঁচু গঠন।

এই ডাইনোসরের নাম রাখা হয়েছে ইস্টিওরাকিস ম্যাকআর্থুরি (Istiorachis macarthurae)। নামটি রাখা হয়েছে বিখ্যাত ব্রিটিশ নাবিক এলেন ম্যাকআর্থারের সম্মানে। এর জীবাশ্ম পাওয়া গেছে ইংল্যান্ডের দক্ষিণ উপকূলের ছোট দ্বীপ আইল অব ওয়াইটে। প্রায় ১২ কোটি বছর আগে, লেট জুরাসিক থেকে আর্লি ক্রেটাসিয়াস যুগে, এটি অন্যান্য ইগুয়ানোডনের আত্মীয়দের সঙ্গে দ্বীপটিতে বিচরণ করত।

কেন পিঠে পালক সদৃশ গঠন?

বিজ্ঞানীরা এখনও নিশ্চিত নন, কেন এর পিঠে এমন অতিরঞ্জিত গঠন ছিল। তাদের ধারণা, এটি হয়তো প্রজনন আকর্ষণ বা নিজেদের প্রজাতি চেনার কাজে ব্যবহৃত হতো।

গবেষক জেরেমি লকউড—অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক, যিনি তার পিএইচডি গবেষণার অংশ হিসেবে এ হাড়গুলো পুনঃপরীক্ষা করেছিলেন—বলেছেন, “এই জীবাশ্মটির বিশেষভাবে লম্বা স্পাইনাল নিউরাল স্পাইন আছে, যা খুবই অস্বাভাবিক।”

প্রায় ২ মিটার (৬.৬ ফুট) উচ্চতা ও প্রায় ১,০০০ কেজি (২,২০৫ পাউন্ড) ওজনের এই ডাইনোসরকে একটি নতুন প্রজাতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তার গবেষণা বৃহস্পতিবার Papers in Palaeontology জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

আইল অব ওয়াইটের বৈচিত্র্য
লকউড বলেন, “আইল অব ওয়াইট অঞ্চলে আর্লি ক্রেটাসিয়াস যুগে ইগুয়ানোডন প্রজাতির ব্যাপক বৈচিত্র্য ছিল। আমি নিশ্চিত, ভবিষ্যতেও আরও নতুন আবিষ্কার হবে।”
তার গবেষণায় দেখা গেছে, এই সময়ে ইগুয়ানোডনরা ক্রমশ আরও উঁচু স্পাইন তৈরি করতে শুরু করে। এর একটি কারণ ছিল—চার পায়ে চলাচলের কারণে পিঠের হাড়গুলোকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য আরও শক্তিশালী পেশী প্রয়োজন ছিল।

যৌন সংকেত নাকি শরীর ঠাণ্ডা রাখার ব্যবস্থা?
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছিল, এই পাল-আকৃতি গঠন শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করত। তবে লকউড এর সঙ্গে একমত নন। তার মতে, এ ধরনের পাল রক্তনালিতে ভরপুর থাকলে আক্রমণে সহজেই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারত, যা বিপজ্জনক।
বরং তিনি মনে করেন, সবচেয়ে যৌক্তিক ব্যাখ্যা হলো যৌন সংকেত বা আকর্ষণ—যেমন ময়ূরের লেজ।“যখন কোনো প্রাণীর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রয়োজনীয় সীমার বাইরে অতিরিক্তভাবে গড়ে ওঠে, তখন সেটি প্রায়শই সঙ্গী আকর্ষণের কারণে হয়। ইস্টিওরাকিসের পালও সম্ভবত সেই বিবর্তনীয় চাপের ফল,” লকউড বলেন।

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ: