হিংসার আগুনে হিংসুকই পুড়ে
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭:৩২, ২ অক্টোবর ২০২৫

প্রতি বছর ২ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অহিংসা দিবস পালিত হয়। জাতিসংঘ ঘোষিত এ দিবস মানবজাতিকে শান্তি, সহনশীলতা ও পারস্পরিক সম্মানের পথে আহ্বান জানায়। সমাজে শান্তির পরিবেশ গড়ে তুলতে হিংসা ও সহিংসতাকে দূরে রাখা জরুরি। কেননা হিংসা কেবল অন্যের ক্ষতি করে না, বরং হিংসুককেই ধ্বংস করে দেয়।
ইসলাম মানব সম্পর্কের ভিত্তি গড়ে তুলেছে ভালোবাসা, ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্যের ওপর। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমরা একে অপরকে হিংসা করো না, বিদ্বেষ পোষণ করো না, পারস্পরিক সম্পর্কচ্ছেদ করো না। হে আল্লাহর বান্দারা, তোমরা ভাই ভাই হয়ে যাও।’ (সহিহ মুসলিম)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হিংসা থেকে বাঁচো। কেননা হিংসা সৎকর্মকে এমনভাবে খেয়ে ফেলে, যেমন আগুন শুকনো কাঠ পুড়িয় ফেলে।’ (আবু দাউদ) অর্থাৎ যে ব্যক্তি হিংসায় ডুবে যায়, তার নেক আমল ধ্বংস হয়ে যায়। অহিংসা দিবসের মূল বার্তা যেমন মানুষের অন্তরে শান্তির বীজ বপন করা, তেমনি ইসলামও শিক্ষা দেয় মানুষকে হিংসা-বিদ্বেষ থেকে দূরে থেকে আত্মাকে শুদ্ধ রাখার।
আধুনিক সভ্যতায় মানুষের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ ঘটেছে, কিন্তু হিংসা, বিদ্বেষ ও সহিংসতা সমাজকে এখনও ক্ষত-বিক্ষত করছে। ব্যক্তিগত জীবনে হিংসা পরিবারে অশান্তি তৈরি করে। কর্মক্ষেত্রে হিংসা সৃষ্টি করে প্রতিযোগিতা ও ষড়যন্ত্র। আর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরে হিংসা জন্ম দেয় যুদ্ধ, রক্তপাত ও ধ্বংস।
ইসলাম অহিংসার একটি শক্ত ভিত্তি তৈরি করেছে নৈতিকতার ওপর। যেমন ক্ষমা করা, ধৈর্য ধারণ করা, অপরের কল্যাণে আন্তরিক হওয়া, এসব গুণই সমাজকে শান্তিপূর্ণ রাখে। মহানবী (সা.)-এর জীবনে অহিংসার দৃষ্টান্ত অসংখ্য। তায়েফবাসীরা তাকে রক্তাক্ত করলেও তিনি প্রতিশোধ নেননি। বরং আল্লাহর কাছে তাদের হেদায়েতের দোয়া করেছেন।
ইসলাম প্রতিদিন মানুষকে অহিংসা ও ভালোবাসার পথে আহ্বান জানায়। হিংসা, বিদ্বেষ ও সহিংসতা মানুষের জীবনকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করে। কিন্তু অহিংসা, ধৈর্য ও সৌহার্দ্য সমাজে আনে আলো ও প্রশান্তি। হিংসার আগুনে হিংসুক নিজেই দগ্ধ হয়। অহিংসাই হলো মানুষের অন্তরের শান্তি ও সমাজের অগ্রগতির মূল শক্তি।