নির্বাচন রাজনৈতিক দল ইসি সংলাপ
নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসির সংলাপ শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৫৮, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সংলাপ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী নির্বাচনে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক পরিবেশ নিশ্চিত করতে কমিশন ১১ দফা আলোচ্যসূচি নিয়ে এই সংলাপ আয়োজন করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে প্রথম দিনের প্রথম সেশনে ছয়টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি অংশ নেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।
স্বাগত বক্তব্য দেন ইসি সচিব আখতার আহমেদ। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রস্তুত করা ১১ দফা এজেন্ডা উপস্থাপন করেন।
প্রথম আলোচ্য বিষয় হিসেবে কমিশন প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলগুলোর করণীয় নির্ধারণের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। তফসিল ঘোষণার আগে কীভাবে প্রার্থীরা এবং দলগুলো আচরণবিধি মেনে চলবে, সে বিষয়ে ইসির পক্ষ থেকে স্পষ্ট নির্দেশনা তৈরির প্রস্তাব করা হয়েছে।
দ্বিতীয় আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে রয়েছে—তফসিল ঘোষণার পর কঠোরভাবে আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করা। কমিশনের মতে, এ সময় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রচারণা ও মাঠপর্যায়ের কর্মকাণ্ডে নিয়ন্ত্রণ থাকা প্রয়োজন।
তৃতীয়ত, আচরণবিধি অনুযায়ী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের অঙ্গীকারনামা সম্পাদনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এতে দলগুলো নির্বাচনকালীন নিয়ম মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দেবে।
চতুর্থ আলোচ্য বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রার্থীদের সঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তাদেরও অঙ্গীকারনামা সম্পাদন করতে হবে, যাতে মাঠপর্যায়ে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনে সুষ্ঠুতা বজায় থাকে।
পঞ্চম এজেন্ডা অনুযায়ী, আউট অব কান্ট্রি ভোট ও ইন কান্ট্রি পোস্টাল ভোট বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা হবে। প্রবাসী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে কমিশন এই প্রক্রিয়া কার্যকর করতে চায়।
ষষ্ঠত, তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনি এজেন্ট নিয়োগ ও ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার বিষয়ে আলোচনা হবে। ইসি মনে করে, এজেন্টদের প্রশিক্ষণ ও অনুমোদন প্রক্রিয়া আরও সুশৃঙ্খল হওয়া জরুরি।
সপ্তম আলোচ্য বিষয় হলো—ভুল তথ্য ও অপতথ্য প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানো রোধে ইসির বিশেষ নজরদারির প্রস্তাব এসেছে।
অষ্টম আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে নির্বাচনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণ। কমিশন মনে করে, ভুয়া ভিডিও ও মনগড়া প্রচারণা নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
নবমত, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা এবং লিঙ্গ, বর্ণ ও ধর্ম নিয়ে কোনো বৈষম্যমূলক আচরণ না করার বিষয়ে আলোচনা হবে।
দশম আলোচ্য বিষয়ে বলা হয়েছে, ধর্মীয় উপাসনালয়কে রাজনৈতিক প্রচারণার জন্য ব্যবহার করা যাবে না। ইসি মনে করে, ধর্মকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা নির্বাচনকালীন পরিবেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
একাদশ ও শেষ এজেন্ডা হলো—এআই–নির্মিত ভিডিও বা কনটেন্টের মাধ্যমে প্রতিপক্ষ, লিঙ্গ বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা থেকে বিরত থাকা।
ইসি সূত্র জানায়, পর্যায়ক্রমে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে, যাতে নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক ঐকমত্য গড়ে তোলা যায়।
