বর্তমান সংবিধান মানলে নির্বাচন ২০২৯ সালে: ফরহাদ মজহার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০:২৫, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
বর্তমান সংবিধান মানলে নির্বাচন ২০২৯ সালে: ফরহাদ মজহার। ছবি: সংগৃহীত
দেশের কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, বাংলাদেশের প্রচলিত সংবিধান অনুযায়ী পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৯ সালের আগে হতে পারে না। সংবিধান অমান্য করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি দেশে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর এক হোটেলে আয়োজিত ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন–২০২৬: জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক এক নির্বাচনী সংলাপে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ফাউন্ডেশন ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (এফএসডিএস)।
সংলাপে ফরহাদ মজহার বলেন, “সংবিধানে লেখা আছে, নির্বাচন হবে পাঁচ বছর পর। ২০২৪ সালের নির্বাচন হয়ে গেছে, তাই পরবর্তী নির্বাচন হবে ২০২৯ সালে।”
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “কোন সাংবিধানিক যুক্তিতে এখনই নির্বাচনের দাবি তোলা হচ্ছে? যদি বর্তমান উপদেষ্টা সরকার শেখ হাসিনার সংবিধান মেনে চলে, তাহলে সেই অনুযায়ী ২০২৯ সালের নির্বাচনকেই মানতে হবে।”
তিনি সমালোচনা করে বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৪ সালের নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করেনি, ফলে সরকারের সাংবিধানিক ভিত্তি শেখ হাসিনার সংবিধানের ওপরই দাঁড়িয়ে আছে।
“এই উপদেষ্টা সরকারের প্রধান তাঁর গণঅভ্যুত্থানকালীন সাংবিধানিক ক্ষমতাকে নিজেই নস্যাৎ করেছেন শেখ হাসিনার সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে”- বলেন ফরহাদ মজহার।
নির্বাচনের দাবি সমাজে বিশৃঙ্খলা ও সংঘাত ডেকে আনতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যদি আমরা আইন না মানি, তাহলে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। আগামী দিনে গৃহযুদ্ধের দায় নিতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোকেই।”
তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি প্রশ্ন রাখেন- “গণপরিষদ নির্বাচনের পথে যেতে অসুবিধা কোথায়?”
সংলাপে স্বাগত বক্তব্যে এফএসডিএসের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর বলেন, “বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ স্থিতিশীলতা নির্ভর করবে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হয় তার ওপর।”
সংলাপে অংশ নেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, মাহদী আমিন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরসহ অন্যান্য রাজনৈতিক ও নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
এছাড়া আলোচনায় ছিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান, পুলিশের সাবেক আইজিপি আশরাফুল হুদা, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার, প্রতিদিনের বাংলাদেশের সম্পাদক মারুফ কামাল খান ও সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান।
সংলাপটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য মামুন আহমেদ ও গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী।
