দিল্লি যাচ্ছেন বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, ২০ নভেম্বর সিএসসি সম্মেলন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৪৫, ১৪ নভেম্বর ২০২৫
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান
বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে আগামী ১৯ নভেম্বর দুই দিনের সফরে দিল্লি যাচ্ছেন।
ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের আমন্ত্রণে তিনি এ সফরে অংশ নিচ্ছেন। ২০ নভেম্বর দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হবে কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভের (সিএসসি )জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সপ্তম সম্মেলন, যেখানে ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও মরিশাস অংশ নেবে।
যদিও এখনো কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি, ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনও সফরটি নিশ্চিত করেছে।
কূটনৈতিক সূত্রে আনুষ্ঠানিক কোনও নিশ্চয়তা না থাকলেও ভারতের একটি উচ্চপর্যায়ের সূত্র ইঙ্গিত দিয়েছে—সম্মেলনের ফাঁকে খলিলুর রহমান ও অজিত দোভালের মধ্যে সরাসরি বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশের পরিবর্তনশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি,আগামী নির্বাচন ঘিরে আঞ্চলিক নিরাপত্তা,দ্বিপক্ষীয় কৌশলগত সম্পর্ক এসব বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে ধারণা কূটনৈতিক মহলের। দুই দেশের নিরাপত্তা সংলাপ দীর্ঘদিন স্থবির থাকায় এ বৈঠককে সম্ভাব্য গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশের উপদেষ্টাদের মধ্যে এটি দ্বিতীয় ভারত সফর। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান ভারত সফরে গিয়েছিলেন।
গত আগস্টে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশ–ভারত কূটনৈতিক যোগাযোগ তুলনামূলকভাবে ধীর। এর মধ্যে
নিউইয়র্কে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন–এস জয়শঙ্কর বৈঠক,ডিসেম্বরের পররাষ্ট্রসচিব বৈঠক,
এপ্রিলে ব্যাংককে মোদী–ইউনূস সৌজন্য সাক্ষাৎ-
এগুলো গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে উল্লেখযোগ্য। তবে কনস্যুলার সংলাপ ও বাণিজ্য বৈঠকের প্রস্তাবে ভারত সাড়া দেয়নি।
কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভ (সিএসসি) হচ্ছে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের একটি বহুপক্ষীয় নিরাপত্তা প্ল্যাটফর্ম। সদস্য দেশগুলো—ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, মরিশাস।
বাংলাদেশ (২০২৪ সালে পূর্ণ সদস্য) আর সেশেলস পর্যবেক্ষক দেশ।
২০২৪ সালের আগস্টে কলম্বোতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ফোরামের স্থায়ী সচিবালয় শ্রীলঙ্কায় স্থাপন করা হয়।
ফোরামের পাঁচ মূল অগ্রাধিকার ক্ষেত্র—সামুদ্রিক নিরাপত্তা, সন্ত্রাস ও চরমপন্থা দমন, মানব পাচার ও সংঘবদ্ধ অপরাধ প্রতিরোধ, সাইবার নিরাপত্তা ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো সুরক্ষা, মানবিক সহায়তা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা।
বাংলাদেশের জন্য এ কনক্লেভ গুরুত্বপূর্ণ কারণ দেশটির সমুদ্র নিরাপত্তা, সন্ত্রাস দমন ও সীমান্ত–মহাসাগরীয় নিরাপত্তা বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়।
চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তাজনিত অনিশ্চয়তার সময়ে এই বৈঠককে কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
