মালয়েশিয়ার মেডিসেরামের সঙ্গে সম্পর্ক স্থগিত করল অ্যানসেল লিমিটেড
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪:৪৮, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
মালয়েশিয়ার মেডিসেরামের সঙ্গে সম্পর্ক স্থগিত করল অ্যানসেল লিমিটেড। ছবি: এবিসি নিউজ
বাংলাদেশি কর্মীদের সঙ্গে অন্যায় আচরণ ও জোরপূর্বক দেশে ফেরত পাঠানোর ঘটনায় মালয়েশিয়ার ছোট সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মেডিসেরামের সঙ্গে তার সম্পর্ক স্থগিত করেছে অস্ট্রেলিয়ান ভিত্তিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল সুরক্ষা সামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যানসেল লিমিটেড। ১৭৭ জন বাংলাদেশি কর্মী বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলন করছিলেন, তাদের মধ্যে মেডিসেরাম বেশ কিছু কর্মীকে বরখাস্ত করেছিল। এ তথ্য বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) অ্যানসেল লিমিটেডের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অ্যানসেল অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে মূল কর্পোরেট সদর দফতর হলেও ব্রাসেলস, নিউ জার্সি ও সাইবারজায়া (মালয়েশিয়া) সহ বিশ্বের ৫৫টি দেশে তারা ব্যবসা পরিচালনা করে। মেডিসেরাম সঙ্গে সম্পর্ক স্থগিতের কারণ হিসেবে অ্যানসেল উল্লেখ করেছে, ওয়ার্ক ভিসা নবায়ন ইস্যুতে ধর্মঘট ও বিদেশি কর্মীদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগস্টে মেডিসেরাম অ্যানসেলসহ তার গ্রাহকদের উদ্বেগের পর কর্মীদের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করেছে। চুক্তি অনুযায়ী, মূল সময়সীমার আগে ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি পরিশোধ করা হয়। তবে ৩১ অক্টোবর অ্যানসেল জানতে পারে, মেডিসেরাম ১৭৭ জন বিদেশি কর্মীকে বরখাস্ত করেছে। অ্যানসেল ৪ নভেম্বর ঘোষণা করে, এই পরিস্থিতিতে সরবরাহকারী সম্পর্ক স্থগিত থাকবে। সম্পর্ক পুনর্বহালের জন্য শর্ত হিসেবে বকেয়া পরিশোধ, শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করা এবং প্রত্যাবাসনের অপেক্ষায় থাকা শ্রমিকদের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদানের কথাও বলা হয়েছে।
মালয়েশিয়ায় মেডিসেরাম ও কাওয়াগুচি ম্যানুফেকচারিয়ের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন এবং জোরপূর্বক ফেরত পাঠানোর প্রতিবাদে সোমবার (১০ নভেম্বর) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মালয়েশিয়ায় শোষণের শিকার ৪৩১ জন বাংলাদেশি শ্রমিকের দ্রুত সহায়তা ও ন্যায়বিচারের দাবি করা হয়।
ভুক্তভোগী কর্মীরা জানান, মেডিসেরামে দীর্ঘদিন ধরে বিলম্বিত বেতন, হুমকি, নির্যাতন ও অমানবিক বাসস্থানের শিকার হয়েছেন। পাসপোর্ট জব্দ থাকায় তারা বিচ্ছিন্ন ছিলেন। পারমিট নবায়ন না হওয়ায় অনেকে অবৈধভাবে পড়েন, যা জোরপূর্বক শ্রমের নিদর্শন। আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে প্রতিশোধমূলকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
কাওয়াগুচি কোম্পানি সনি, প্যানাসনিক ও দাইকিনের সরবরাহকারী হলেও শ্রমিকরা ২০২২ সাল থেকে বেতন অনিয়মের শিকার হন। ৩০৮ জন শ্রমিককে ক্ষতিপূরণ ও রিক্রুটমেন্ট ফি কিছুটা পরিশোধ করা হলেও ২৫১ জনের বকেয়া বেতন এখনও দেনা। মালয়েশিয়ার শ্রম দফতরের সমঝোতা বৈঠকেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
মানববন্ধনে শ্রমিকরা সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করে ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।
