বাংলাদেশির সাড়ে সাত বছরের কারাদণ্ড, জরিমানা ও বেত্রাঘাতের আদেশ
প্রবাস ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫:৫০, ৪ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২৩:১৩, ৪ অক্টোবর ২০২৫

ব্রুনাইয়ে মানব পাচারের অভিযোগে মো. খাইরুল বাশার নামে এক বাংলাদেশিকে সাড়ে সাত বছরের কারাদণ্ড, এক লাখ ২০ হাজার ব্রুনাই ডলার জরিমানা এবং ১২ বেত্রাঘাতের শাস্তি দিয়েছে দেশটির হাইকোর্ট।
গত বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিচারক মুহাম্মদ ফয়সাল বিন হাজী কেফলি এ রায় ঘোষণা করেন। শুনানিতে আসামি খাইরুল বাশার তার অপরাধ স্বীকার করেন বলে আদালত জানায়।
ব্রুনাই সরকারের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়।
আদালতের নথি অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ৩০ মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে খাইরুল বাশার ছয়জন বাংলাদেশিকে ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ব্রুনাইয়ে নিয়ে যান। পরে তাদের জোরপূর্বক শ্রমে নিয়োজিত করেন। তার বিরুদ্ধে মানব পাচার ও চোরাচালান আইনে ছয়টি অভিযোগ আনা হয়।
আদালত রায়ে উল্লেখ করে, এটি কোনো এককালীন অপরাধ নয়; বরং একটি পরিকল্পিত ও ধারাবাহিক শোষণমূলক প্রক্রিয়া, যা দুর্বল মানুষের ওপর নির্যাতনের দৃষ্টান্ত।
বিচারক বলেন, “আসামির এই অপরাধ কোনো সুযোগসন্ধানী ঘটনা নয়, বরং মানবাধিকারের গভীর লঙ্ঘন। ভুক্তভোগীরা তার মিথ্যা প্রতিশ্রুতির কারণে ভয়াবহ দুর্দশার শিকার হয়েছেন।”
ভুক্তভোগীদের জবানবন্দি অনুযায়ী, খাইরুল বাশার তাদের কাছ থেকে চাকরির নামে মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়েছিলেন। কিন্তু ব্রুনাই পৌঁছানোর পর তাদের কোনো নির্দিষ্ট কাজ না দিয়ে অল্প বেতনে অনিশ্চিত শ্রমে বাধ্য করা হয়। তাদের পাসপোর্ট জব্দ করে রাখা হয় এবং অর্থ দিতে না পারলে দেশে ফেরত পাঠানোর হুমকি দেওয়া হয়। এই ঘটনাকে “মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন ও নিষ্ঠুর শোষণ” বলে আখ্যায়িত করে আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর হাজাহ রোযাইমাহ বিনতে হাজী আবদুল রহমান ও হাজাহ সিটি মুয়িজজাহ বিনতে হাজী সাবলি।
আসামির পক্ষে ছিলেন দায়ুদ ইসমাইল অ্যান্ড কোম্পানির আইনজীবী দল।
ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশি শ্রমিকদের একটি অংশ দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধ রিক্রুটিং ও মানব পাচার চক্রের শিকার হচ্ছে। দেশটির শ্রম আইন অনুযায়ী, মানব পাচার প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ৩০ বছরের কারাদণ্ড ও বেত্রাঘাতের সাজা দেওয়া যায়। এ ঘটনায় বাংলাদেশ দূতাবাস এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য জানায়নি।