শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

| ১১ আশ্বিন ১৪৩২

অভিবাসীদের জন্য খারাপ খবর

যুক্তরাজ্যে বাধ্যতামূলক ডিজিটাল আইডি চালুর ঘোষণা

সমাজকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬:৩৭, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৬:৩৭, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

যুক্তরাজ্যে বাধ্যতামূলক ডিজিটাল আইডি চালুর ঘোষণা

অভিবাসন ইস্যুতে তীব্র জনমত ও রাজনৈতিক চাপের মুখে যুক্তরাজ্য সরকার বাধ্যতামূলক ডিজিটাল আইডি চালুর ঘোষণা দিয়েছে। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের নেতৃত্বাধীন লেবার সরকার এ পরিকল্পনা প্রকাশ করে। তাতে জানানো হয়, এ উদ্যোগ মূলত অনথিভুক্ত অভিবাসীদের কর্মসংস্থান রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রতিটি ব্রিটিশ নাগরিক ও বৈধ বাসিন্দার নাম, জন্মতারিখ, ছবি, নাগরিকত্ব ও আবাসিক তথ্য সংরক্ষিত থাকবে ডিজিটাল আইডিতে, যা স্মার্টফোনে রাখা যাবে। যদিও দৈনন্দিন জীবনে এটি বহন বাধ্যতামূলক নয়, তবে চাকরি কিংবা কর্মক্ষেত্রে পরিচয় প্রমাণে এটি আবশ্যক করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেন, “ডিজিটাল আইডি যুক্তরাজ্যের জন্য বিশাল সুযোগ। এটি সাধারণ নাগরিকদের সেবা গ্রহণ সহজ করবে, একইসঙ্গে অবৈধভাবে কাজ করার প্রবণতাকে কঠিন করে তুলবে। এতে আমাদের সীমান্ত আরও নিরাপদ হবে।”
সরকার জানিয়েছে, এ ব্যবস্থা চালু হলে ড্রাইভিং লাইসেন্স, শিশু যত্নভাতা, কল্যাণ ভাতা কিংবা ট্যাক্স-সংক্রান্ত সেবাগুলো সহজে পাওয়া যাবে। একইসঙ্গে অবৈধ অভিবাসীরা কাজের সুযোগ না পাওয়ায় দেশে অবৈধভাবে বসবাসের প্রবণতাও কমবে।
ডিজিটাল আইডির বাধ্যতামূলক ব্যবহারকে কেন্দ্র করে যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়েছে।লিবারেল ডেমোক্র্যাটস দল জানিয়েছে, নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য প্রতিদিনের কাজে ব্যবহারের জন্য বাধ্য করা নাগরিক স্বাধীনতার পরিপন্থী।
কনজারভেটিভ পার্টি নেতা কেমি বেডেনোচ এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লিখেছেন, “আমরা কখনো এমন কোনো ব্যবস্থার পক্ষে নই যা বাধ্যতামূলকভাবে ব্রিটিশ নাগরিকদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে।”
ডানপন্থী রিফর্ম ইউকে পার্টির নেতা নাইজেল ফারাজ এটিকে “ভোটারদের বোকা বানানোর কৌশল” বলে অভিহিত করেছেন। তার দাবি, এটি অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে কোনো ভূমিকা রাখবে না, বরং সাধারণ নাগরিকদের নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হবে।
উল্লেখ্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে যুক্তরাজ্যে আইডি কার্ড ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছিল। টনি ব্লেয়ারের আমলে নতুন করে চালুর উদ্যোগ নিলেও নাগরিক স্বাধীনতার প্রশ্নে তীব্র বিরোধিতার কারণে তা বাস্তবায়ন হয়নি।
তবে চলমান অভিবাসন সংকট ও জনমতের চাপে এবার লেবার সরকার এ ব্যবস্থা কার্যকর করার দিকে এগোচ্ছে। যদিও শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ডিজিটাল আইডি বিরোধী একটি পিটিশনে সই করেছে ৫ লাখ ৭৫ হাজারের বেশি মানুষ, সাম্প্রতিক জনমত জরিপে দেখা গেছে বেশিরভাগ নাগরিক এ উদ্যোগকে সমর্থন করছে।

রাজনৈতিক মহল মনে করছে, লেবার সরকারের বার্ষিক সম্মেলনের ঠিক আগে এ ঘোষণা দেওয়ার মাধ্যমে দলটি জনমতের প্রতি সাড়া দেওয়ার পাশাপাশি অভিবাসন নীতিতে শক্ত অবস্থান প্রদর্শন করতে চাইছে।

আরও পড়ুন