নদী দখলে ঐক্য, উদ্ধারে অবহেলা : আনু মুহাম্মদ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭:৩৮, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশের নদীগুলোকে ঘিরে যে সংকট তৈরি হয়েছে, তার মূল কারণ তিনটি বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ ও পরিবেশ চিন্তাবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেছেন—একটি কারণ ভারতের অভ্যন্তরীণ বাঁধ ও পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ, আর বাকি দুটি আমাদের নিজেদের তৈরি। উন্নয়ন প্রকল্পের নামে নির্বিচারে নদী ধ্বংস এবং ক্ষমতাবান গোষ্ঠীর দখলদারি। অথচ এসব ভয়াবহ সংকট মোকাবিলায় সরকারের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে নোঙর ট্রাস্টের আয়োজনে ‘আন্তসীমা নদী’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। আনু মুহাম্মদ বলেন, দেশের ভেতরে নদী দখল ও দূষণে জাতীয় ঐক্য দেখা গেলেও নদী উদ্ধারে কোনো ঐক্য নেই।
আনু মুহাম্মদ প্রশ্ন তুলেছেন, যৌথ নদী কমিশন কেন কার্যকর ভূমিকা রাখে না। তার মতে, আন্তর্জাতিক আলোচনায় সব সময় বাংলাদেশের দিক থেকে ঘাটতি দেখা যায়। সরকারগুলো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি ডেলটা প্ল্যানের কথা উল্লেখ করেন, যা নেদারল্যান্ডসের একটি গোষ্ঠী করে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ভারতের মধ্যেই ফারাক্কা বাঁধের বিরোধিতা হয়েছে এবং বর্তমানে সেখানে বাঁধ ভাঙার দাবিও উঠছে। তাই ভারতের নাগরিক সমাজের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ জোরদার করা জরুরি।
আনু মুহাম্মদ মনে করেন, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরই দেশের অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি নদী সংস্কার কমিটি গঠন করা যেত। পাশাপাশি সহজ একটি পদক্ষেপ হতে পারতো জাতিসংঘের ১৯৯৬ সালের আন্তর্জাতিক জলসম্পদ কনভেনশনে স্বাক্ষর করা।
আলোচনা সভার সভাপতি নোঙর ট্রাস্টের চেয়ারম্যান সুমন শামস বলেন, নদী সুরক্ষা ও কার্যকর ব্যবস্থাপনার জন্য একটি স্বতন্ত্র নদীসম্পদ মন্ত্রণালয় প্রয়োজন। কারণ বর্তমানে নদীসংক্রান্ত কাজ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার মধ্যে বিভক্ত থাকায় কার্যকর ফল পাওয়া যায় না। একইসঙ্গে তিনি ২৩ মে-কে ‘জাতীয় নদী দিবস’ ঘোষণা করারও দাবি জানান।