শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

| ১১ আশ্বিন ১৪৩২

শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ায় ভারতের সাথে সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬:৩৮, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ায় ভারতের সাথে সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ

 


সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার কারণে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উত্তেজনার দিকে মোড় নিয়েছে- এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও তরুণদের মৃত্যুর জন্য শেখ হাসিনা দায়ী, এবং তাকে ভারত আশ্রয় দেওয়ায় সম্পর্কের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।

বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে এশিয়া সোসাইটি ও এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউট আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “সহযোগিতার ভিত্তিতে আঞ্চলিক অর্থনীতি গড়ে উঠলে সবাই উপকৃত হয়। কিন্তু বর্তমানে আমাদের ভারতীয়দের সঙ্গে সমস্যা হচ্ছে, কারণ তারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের কার্যকলাপ পছন্দ করছে না।”

তিনি ভারতের কিছু গণমাধ্যমে ইসলামি উগ্রবাদ ও তালেবান সংশ্লিষ্ট ভুয়া তথ্য প্রচার নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। “তারা বলেছে আমি নাকি তালেবান! আমার তো দাড়িই নেই, যদি থাকতো তাও বাড়িতে রেখে আসতাম,”—মন্তব্য করেন তিনি।

আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রসারে সার্কের গুরুত্ব তুলে ধরে ইউনূস বলেন, “সার্ক একটি পারিবারিক ধারণা, যার জন্ম বাংলাদেশেই। এতে তরুণরা একে-অপরের দেশে সফর, শিক্ষা ও ব্যবসার সুযোগ পায়।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের পূর্বদিকে ভারতের সাতটি ল্যান্ডলকড রাজ্য রয়েছে—যাদের সমুদ্র সংযোগ নেই। আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য এই রাজ্যগুলোকেও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।”

মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে স্থায়ী দ্বন্দ্ব চাই না। রোহিঙ্গারা যদি স্বেচ্ছায় ফিরে যেতে চায়, তবে তাদের ঘরবাড়ি, পেশা ও ব্যবসায় ফেরার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।”

তিনি বলেন, মিয়ানমার হয়তো আসিয়ানের মাধ্যমে সম্পূর্ণভাবে এগিয়ে না আসলেও, আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।

আসিয়ানের সদস্যপদ ও ভবিষ্যৎ নির্বাচন প্রসঙ্গে ড. ইউনূস জানান, বাংলাদেশ অনানুষ্ঠানিকভাবে আসিয়ানের সদস্য হওয়ার সুযোগ পেতে পারে। আসিয়ানকে তিনি একটি কার্যকর প্ল্যাটফর্ম হিসেবে উল্লেখ করেন, যেখানে আঞ্চলিক সমন্বয় ও আন্তঃসংযোগ গড়ে তোলা সম্ভব।

শেষে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “আগামী ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে—এই প্রতিশ্রুতি আমরা পুনর্ব্যক্ত করছি।”

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন