শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

| ১১ আশ্বিন ১৪৩২

ট্রাক ও আসবাবে ট্রাম্পের নতুন শুল্ক

২৫% ট্রাক, ৩০% ফার্নিচার; ৫০% কিচেন ক্যাবিনেট

সমাজকাল ডেস্ক 

প্রকাশ: ১৭:৪১, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

২৫% ট্রাক, ৩০% ফার্নিচার; ৫০% কিচেন ক্যাবিনেট

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) আমদানিকৃত ট্রাক, আসবাব ও কিচেন ক্যাবিনেটের ওপর বড় ধরনের শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী, বিদেশি কোম্পানিগুলো মার্কিন বাজারে পণ্য “বন্যার মতো ঢুকিয়ে” দিচ্ছে, যা জাতীয় নিরাপত্তা ও উৎপাদন খাতের জন্য হুমকি। তাই স্থানীয় শিল্পকে রক্ষা করতে এই নতুন শুল্ক আরোপ অপরিহার্য হয়ে পড়েছে বলে দাবি করেছেন ট্রাম্প।

আসবাব ও ক্যাবিনেটে বড় ধাক্কা
ট্রাম্প জানিয়েছেন, আগামী ১ অক্টোবর থেকে সব ধরনের কিচেন ক্যাবিনেট, বাথরুম ভ্যানিটি ও সংশ্লিষ্ট পণ্যে ৫০% শুল্ক কার্যকর হবে। এ ছাড়া সোফা ও অন্যান্য আবৃত আসবাবে ৩০% শুল্ক বসানো হবে।
গত এক বছরে ট্রাম্পের আরোপ করা পূর্ববর্তী শুল্কের প্রভাবে আসবাবের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরো জানাচ্ছে, গত আগস্টে আসবাবের দাম ২০২৪ সালের আগস্টের তুলনায় ৪.৭% বেশি। বিশেষত বসার ঘর ও ডাইনিং রুমের আসবাবের দাম বেড়েছে প্রায় ৯.৫%।
চীন ও ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রে আসবাব রপ্তানির শীর্ষ দুই দেশ, যেখান থেকে গত বছর প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি হয়েছিল। নতুন শুল্ক কার্যকর হলে ভোক্তাদের জন্য আসবাব কেনা আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠতে পারে। ঘোষণার পরেই ওয়েফেয়ার, আরএইচ , ও উইলিয়ামস-সোনোমা –এর শেয়ারমূল্য নিম্নমুখী হয়।

ট্রাকে ২৫% শুল্ক
একই দিনে ট্রাম্প ঘোষণা করেন, যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিকৃত সব ভারী ট্রাকে ২৫% শুল্ক কার্যকর হবে। এর ফলে মেক্সিকো সবচেয়ে বড় ধাক্কা খাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, কারণ যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিকৃত ভারী ট্রাকের ৭৮% মেক্সিকো থেকেই আসে।
মার্কিন ট্রাক নির্মাতা কোম্পানি যেমন পিটারবিল্ট, কেনওর্থ, ফ্রেইটলাইনার, ম্যাক ট্রাকস—তাদের প্রতিযোগিতা বজায় রাখতে এই পদক্ষেপ জরুরি বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প। তবে বাস্তবে শুল্ক বৃদ্ধির কারণে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের দাম বেড়ে দেশীয় উৎপাদিত ট্রাকও অনেক সময় বিদেশি ট্রাকের তুলনায় বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
ট্রাম্প বলেন, “আমাদের বড় ট্রাক কোম্পানিগুলোকে বাইরের প্রতিযোগিতা থেকে রক্ষা করা জরুরি। আমাদের ট্রাকচালকরা আর্থিকভাবে সুস্থ ও শক্তিশালী না হলে তা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।”
এপ্রিলে ট্রাম্প বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছিলেন, মধ্য ও ভারী ট্রাক আমদানি যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে কি না তা তদন্ত করতে। বৃহস্পতিবারের ঘোষণাটি সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
ট্রাম্প ইতোমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি কাঠ, সেমিকন্ডাক্টরসহ আরও বেশ কিছু পণ্যে নতুন শুল্ক আরোপ করতে পারেন। ফলে আগামী মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে দাম আরও অস্থির হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন