শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

| ১১ আশ্বিন ১৪৩২

ইরানের নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে মধ্যরাতেই ঘোষণা

সমাজকাল ডেস্ক 

প্রকাশ: ১৭:৩২, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ইরানের নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে মধ্যরাতেই ঘোষণা

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে (ইউএনএসসি) আজ শুক্রবার গুরুত্বপূর্ণ এক ভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যা ইরানের ওপর আসন্ন আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। রাশিয়া ও চীন প্রস্তাব দিয়েছে—ছয় মাসের জন্য “স্ন্যাপব্যাক” নিষেধাজ্ঞা স্থগিত রাখা হোক, যাতে আরও আলোচনার সুযোগ তৈরি হয়। তবে কূটনৈতিক মহলের ধারণা, এ প্রস্তাবটি প্রয়োজনীয় সমর্থন পাবে না।

আসছে মধ্যরাতেই নতুন নিষেধাজ্ঞা
শনিবার মধ্যরাতে ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের পথ খুলে যাবে। এতে ইরানের ওপর আবারও বৈশ্বিক অস্ত্র আমবারগো, সম্পদ জব্দ, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে ব্যবহারযোগ্য যন্ত্রপাতি আমদানি নিষিদ্ধকরণ এবং ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন সম্পর্কিত সীমাবদ্ধতা কার্যকর হবে।
ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য অভিযোগ করছে—ইরান ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি ভঙ্গ করেছে। এ কারণেই তারা নিষেধাজ্ঞা ফেরানোর পক্ষপাতী।
ভোটের আগেই ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেছেন, যদি শত্রুতাপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয় এবং নিষেধাজ্ঞা ফের কার্যকর করা হয়, তবে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-এর সঙ্গে স্বাক্ষরিত সাম্প্রতিক চুক্তি বাতিল বলে গণ্য হবে।
তার ভাষায়, “সেক্ষেত্রে ইরানের কোনো বাস্তবসম্মত প্রতিশ্রুতি আর বহাল থাকবে না।”
তিনি ইউরোপীয় ত্রয়ীকে (ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য) “অন্যায্য, বেআইনি ও দায়িত্বজ্ঞানহীন” বলে আখ্যা দিয়েছেন।
চীন ও রাশিয়া শুক্রবার রাতে প্রস্তাব উত্থাপন করবে, যাতে আগামী বছরের ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা স্থগিত রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। খসড়া প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রসহ সব পক্ষকে অবিলম্বে আলোচনায় ফেরার অনুরোধ জানানো হয়েছে। কিন্তু কূটনীতিকদের মতে, ১৫ সদস্যের পরিষদে এ প্রস্তাব পাশ হওয়ার জন্য ন্যূনতম নয় ভোট মিলবে না।
এরই মধ্যে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ানও নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বলেছেন, “নিষেধাজ্ঞা ফেরানো হলে আমরা যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত।” তবে তিনি আবারও জোর দিয়ে বলেন, ইরান কখনোই পারমাণবিক বোমা বানানোর পথে হাঁটবে না।
যদি নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়, ইরানের অর্থনীতি আরও চাপের মুখে পড়বে। অস্ত্র বাণিজ্য, প্রযুক্তি স্থানান্তর ও আন্তর্জাতিক আর্থিক কার্যক্রমে বাধা তৈরি হবে। একই সঙ্গে আইএইএ’র তদারকি কার্যক্রমও ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা বৈশ্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও অনিশ্চিত করে তুলবে।

? এই সংকট এখন বৈশ্বিক কূটনীতির অন্যতম বড় পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউরোপীয় দেশগুলোর কঠোর অবস্থান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের চাপ, আর চীন-রাশিয়ার পাল্টা প্রচেষ্টা—সব মিলিয়ে ইরান প্রশ্নে জাতিসংঘ আবারও গভীর বিভাজনের মুখে।

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন