আরএসএস-বিজেপি দ্বন্দ্বে সভাপতি নির্বাচন বিলম্বিত
মোদি-শাহ ঘনিষ্ঠ বনাম সংঘপন্থী প্রার্থী নিয়ে টানাপড়েন
সমাজকাল ডেস্ক3
প্রকাশ: ১৫:৪৭, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-এর নতুন সভাপতি নির্বাচনের সময়সীমা অনেক আগেই পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত কোনও নাম ঘোষণা করা হয়নি। এতে দল ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) মধ্যে দ্বন্দ্ব ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজেদের ঘনিষ্ঠ কাউকে সভাপতি পদে বসাতে চান, যাতে দলের ওপর প্রভাব বজায় থাকে। বিপরীতে সংঘ চাইছে তাদের পছন্দের নেতৃত্বকে সামনে আনা হোক।
ভাগবতের মন্তব্যে বিতর্ক
সম্প্রতি সংঘপ্রধান মোহন ভাগবত প্রকাশ্যেই উষ্মা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “বিজেপির সভাপতি সংঘ ঠিক করে না। যদি করত, তাহলে এত দেরি হত না।” এই বক্তব্যে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়, এমনকি কেউ কেউ অনুমান করেন—আরএসএস কি তাহলে সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে? তবে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস পরে ব্যাখ্যা দেন যে, ভাগবত আসলে বলতে চেয়েছেন—দলের সভাপতি নির্বাচন বিজেপির অভ্যন্তরীণ বিষয়, আরএসএস কেবল পরামর্শ দিতে পারে।
প্রার্থী নির্বাচনে অচলাবস্থা
একসময় সভাপতি পদের দৌড়ে শিবরাজ সিং চৌহান, মনোহরলাল খাট্টার, ভুপেন্দ্র যাদবদের নাম শোনা গিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তারা সবাই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছেন। বিজেপির প্রচলিত নীতিমালা অনুযায়ী, বড় সংগঠনপদে থাকা কেউ মন্ত্রিসভায় থাকতে পারেন না। তাই অমিত শাহকেও সভাপতির পদ ছাড়তে হয়েছিল। এবার শোনা যাচ্ছে—হিন্দি বলতে পারদর্শী কোনও দক্ষিণ ভারতীয় নেতাকে সভাপতি পদে বসানো হতে পারে। একইসঙ্গে মহিলা বা দলিত মুখ নিয়েও ভাবনা চলছে।
সংঘ-বিজেপি সমীকরণ
সমালোচকদের মতে, সভাপতির নাম ঘোষণায় বিলম্বের মূল কারণ সংঘের চাপ ও মতপার্থক্য। ভাগবতের বক্তব্যও ইঙ্গিত দেয়—সংঘ চায় না পুরো সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে চলে যাক। এই পরিস্থিতিতে সভাপতি নির্বাচনের সমীকরণ আরও জটিল হয়ে পড়েছে।
বিজেপি-আরএসএস সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে ঘনিষ্ঠ হলেও নেতৃত্ব বাছাইয়ের প্রশ্নে দীর্ঘদিন ধরেই দ্বন্দ্ব থাকে। এবারও সভাপতি নির্বাচন সেই টানাপড়েনের প্রকট রূপ তুলে ধরছে।