অ্যাসাইলাম প্রথা ভেঙে পড়েছে
জাতিসংঘে বড় পরিবর্তনের ডাক দিল ট্রাম্প প্রশাসন
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১২:৫১, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ট্রাম্প প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মার্কিন ডেপুটি সেক্রেটারি অব স্টেট ক্রিস ল্যান্ডাউ বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ফাঁকে আয়োজিত এক আলোচনায় দাবি করেছেন যে, আন্তর্জাতিক আশ্রয় ব্যবস্থা (Global Asylum System) ভেঙে পড়েছে এবং এ ব্যবস্থার মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন।
তিনি বলেন, বর্তমান শরণার্থী কনভেনশনসহ বিদ্যমান কাঠামোগুলো সেকেলে হয়ে গেছে এবং অপব্যবহারের সুযোগ তৈরি করেছে। “আশ্রয় প্রথা এখন অভিবাসনের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, যা কার্যত ‘অবৈধ অভিবাসনকে বৈধ করছে’,” মন্তব্য করেন ল্যান্ডাউ।
আশ্রয় নীতি নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র শরণার্থী পুনর্বাসন কার্যক্রম কার্যত বন্ধ করে দিয়েছে, শুধুমাত্র শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানদের গ্রহণ করেছে।
ট্রাম্প প্রশাসন কড়া বহিষ্কার নীতি অনুসরণ করছে, যা আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউরোপীয় দেশগুলোর আশ্রয় নীতি নিয়ে কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, “ওরা নরকে যাচ্ছে।”
ল্যান্ডাউয়ের প্রস্তাব, আশ্রয়কে অস্থায়ী ব্যবস্থা হিসেবে সীমিত করার আহ্বান। শরণার্থীরা যখন নিজ দেশে নিরাপদে ফিরে যেতে পারবেন, তখন তাদের ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।আশ্রয় নেওয়ার ক্ষেত্রে পছন্দসই দেশ বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকা উচিত নয়।এক দেশ থেকে পালিয়ে বহু দেশ অতিক্রম করে অন্য দেশে আশ্রয় চাওয়াকে তিনি “মাইগ্রেশনের বিকল্প” বলে অভিহিত করেন।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডি সতর্ক করে বলেন, “আশ্রয় একটি প্রাচীন মানবিক নীতি, একে দুর্বল করা চলবে না।”
রিফিউজি ইন্টারন্যাশনালের সভাপতি জেরেমি কোনিন্ডাইক আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, এই উদ্যোগ অনেক দেশকে শরণার্থী তাড়ানোর অজুহাত দিতে পারে। তিনি বলেন, জোর করে কাউকে অসময়ে ফেরত পাঠালে তারা স্থায়ীভাবে ফিরতে পারবে না, এতে অস্থিরতা বাড়বে।
ল্যান্ডাউয়ের সঙ্গে আলোচনায় ছিলেন কসোভোর প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, লাইবেরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পানামার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী। যদিও সংস্কারের পক্ষে সায় দেন তারা, তবুও লাইবেরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সতর্ক করে বলেন, “সার্বভৌমত্ব গুরুত্বপূর্ণ হলেও এটি ভাগ করা দায়িত্বকে বাতিল করতে পারে না।”
এই অবস্থানকে ইউরোপের কট্টর-ডান দলগুলো সমর্থন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যারা ইতিমধ্যেই অভিবাসন নীতিতে সীমাবদ্ধতা আরোপের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে।