ট্রাম্পের ঘোষণা
ইসরায়েলকে পশ্চিম তীর দখল করতে দেব না
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১১:৪০, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, তিনি ইসরায়েলকে দখলকৃত পশ্চিম তীর সংযুক্ত করতে দেবেন না। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ট্রাম্প এ চমকপ্রদ মন্তব্য করেন। এ ঘোষণা আসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ভাষণের ঠিক একদিন আগে।
ট্রাম্প বলেন, “আমি পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত হতে দেব না। কোনোভাবেই নয়। এটা ঘটতে যাচ্ছে না। যথেষ্ট হয়েছে, এখন থামার সময়।” তবে পশ্চিম তীর সংযুক্তিকরণ ঠেকাতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে, সে বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি।
কাতারভিত্তিক সেন্টার ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান স্টাডিজের বিশ্লেষক মুইন রাব্বানি আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের বক্তব্যকে ‘ইতিবাচক’ আখ্যা দিলেও সতর্ক করে বলেন, “কেউ যদি ট্রাম্পের কথায় ভরসা করে, তবে তা নিজের ঝুঁকিতেই করে।” তার মতে, আসল প্রশ্ন হলো—ট্রাম্প কি সত্যিই ইসরায়েলকে থামাতে সক্ষম হবেন, আর ইসরায়েল এগোতে চাইলে তিনি তখন কী করবেন?
ইসরায়েলের চরম ডানপন্থী সরকার দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিম তীর সংযুক্তির জন্য চাপ দিয়ে আসছে। চলতি বছরের জুলাইয়ে ইসরায়েলি পার্লামেন্টে (নেসেট) একটি অ-বাধ্যতামূলক প্রস্তাব ৭১–১৩ ভোটে গৃহীত হয়, যেখানে পশ্চিম তীর দখলের সমর্থন জানানো হয়। এ প্রস্তাব তোলেন অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ—যিনি নিজেই অবৈধ বসতিতে বাস করেন এবং নতুন হাজারো আবাসন নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। তার মতে, এ সম্প্রসারণের পর ‘ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের ধারণা চিরতরে সমাধিস্থ হবে।’
১৯৬৭ সাল থেকে ইসরায়েল দখলকৃত পশ্চিম তীরে ধারাবাহিকভাবে বসতি স্থাপন করে আসছে। গত ২০২৪ সালের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (ICJ) রায় দেয়—এসব বসতি অবৈধ এবং তা বন্ধ করে ফিলিস্তিনিদের জমি ফিরিয়ে দিতে হবে। ইতোমধ্যে অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, কানাডা, পর্তুগালসহ একাধিক দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে সামান্য পরিবর্তনও ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংকটকে ঘনীভূত করতে পারে।
গাজার পরিস্থিতি নিয়েও মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি ভয়াবহ, খুবই খারাপ।” তবে আশার ইঙ্গিত দিয়ে উল্লেখ করেন, শিগগিরই একটি শান্তি চুক্তি হতে পারে। জাতিসংঘ অধিবেশনের ফাঁকে তিনি সৌদি আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর, জর্ডান, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তানের নেতাদের সঙ্গে গাজা প্রসঙ্গে বৈঠক করেছেন।