পৃথিবীর অষ্টম শীর্ষ পর্বত জয় দুই বাংলাদেশির
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫:০২, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

পৃথিবীর অষ্টম শীর্ষ পর্বত মানাসলু জয় করেছেন দুই বাংলাদেশি পর্বতারোহী—বাবর আলী ও তানভীর আহমেদ। শুক্রবার ভোরে তারা নেপালের মানসিরি হিমাল রেঞ্জে অবস্থিত ৮,১৬৩ মিটার উচ্চতার এই পর্বত মানাসলুর শীর্ষে পৌঁছান।
এভারেস্টজয়ী বাবর আলী এবার অক্সিজেন ছাড়াই মানাসলুতে ওঠেন, যা তার চতুর্থ আট হাজারী শৃঙ্গ জয়।
অন্যদিকে, তানভীর আহমেদ প্রথমবারের মতো আট হাজারী কোনো পর্বত অভিযানে গিয়েই সফলতা অর্জন করলেন।
‘মানাসলু অ্যাসেন্ট: ভার্টিক্যাল ডুয়ো’ শীর্ষক এই অভিযানের আয়োজন করেছে পর্বতারোহণ ক্লাব ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স। তাদের গাইড হিসেবে ছিলেন বীরে তামাং এবং ফুর্বা অংডি শেরপা। অভিযানের আউটফিটার ছিল ‘স্নোয়ি হরাইজন ট্রেক্স অ্যান্ড এক্সপিডিশন’।
ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সের সভাপতি ফরহান জামান বলেন, “একই দিনে বিশ্বের অষ্টম শীর্ষ পর্বত মানাসলুতে দুইবার উড়ল লাল-সবুজের পতাকা। বাবর প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অক্সিজেন ছাড়াই আট হাজারী শৃঙ্গে উঠেছেন। আর তানভীর প্রমাণ করেছে যে প্রাতিষ্ঠানিক কোর্স ছাড়াও দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি আর অনুশীলন দিয়েই উচ্চ শিখরে সাফল্য পাওয়া যায়।”
তারা ৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ থেকে নেপাল পৌঁছে ধাপে ধাপে অভিযানের প্রস্তুতি নেন। বিভিন্ন ক্যাম্পে অনুশীলন ও উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার পর ২৬ সেপ্টেম্বর ভোরে দুজনেই শীর্ষে পৌঁছান।
ফরহান জামান জানিয়েছেন, বাবর আলীর লক্ষ্য বিশ্বের সবগুলো ১৪টি আট হাজারী শৃঙ্গ জয় করা। এখন পর্যন্ত তিনি ৪টিতে সফল হয়েছেন। আর তানভীর আরও বহু পর্বতে অভিযানে যেতে চান।
এই অভিযানে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে কয়েকটি দেশি প্রতিষ্ঠান, যার মধ্যে রয়েছে সামুদা, ভিজুয়াল নিটওয়ারস, গিগাবাইট বাংলাদেশ, চন্দ্রবিন্দু প্রকাশন, সিনোভেস্ট, আদিবা ফুটওয়্যার প্রভৃতি।
বাবর আলী পর্বতারোহণ ক্লাব ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স এর সাধারণ সম্পাদক এবং তানভীর আহমেদ এই ক্লাবের মাউন্টেনিয়ারিং বিষয়ক সম্পাদক।
তানভীর গত বছর আমা দাবলাম সামিট করেন। প্রথম বাঙালি হিসেবে বাবর আলী ২০২২ সালে আমা দাবালাম শীর্ষে আরোহণ করেছিলেন।
‘ভিএফ এশিয়া বাংলাদেশ’র অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত তানভীর কিশোরগঞ্জ সদরের খরমপট্টি এলাকার আইনজীবী তারেক উদ্দিন আহমদ ও শিরীন আহমেদের প্রথম সন্তান। তানভীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি এর ২০০৬ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন।
আর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে চিকিৎসা শাস্ত্রে ডিগ্রি অর্জনকারী বাবর আলী চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার নজুমিয়া হাটের লেয়াকত আলী ও লুৎফুন্নাহার বেগমের দ্বিতীয় সন্তান। বাবর ইতোমধ্যে এভারেস্ট, লোৎসে, অন্নপূর্ণাসহ বেশ কিছু সফল অভিযান করেছেন।
বাংলাদেশি পতাকা উড়াল দিয়ে বাবর ও তানভীর জানিয়ে দিলেন, সাহস, অধ্যবসায় আর ইচ্ছাশক্তি থাকলে বিশ্বের সবচেয়ে দুর্গম শিখরও জয় করা সম্ভব।