শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

| ১১ আশ্বিন ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্রে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সম্পদ জব্দে এমএলএআর পাঠাচ্ছে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪:৪১, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সম্পদ জব্দে এমএলএআর পাঠাচ্ছে দুদক

দেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পদ জব্দের উদ্যোগ নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ লক্ষ্যে দেশটির কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হচ্ছে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর)।

দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জানান, দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে জয়ের নামে থাকা বিভিন্ন সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ দেয় আদালত। ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্রে এমএলএআর পাঠাচ্ছে দুদক। 

দুদকের নথি অনুযায়ী, জয়ের নামে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত দুটি বাড়ি, আটটি গাড়ি, ১২টি ব্যাংক হিসাব ও ছয়টি কোম্পানি রয়েছে। এর মধ্যে ভার্জিনিয়ার গ্রেট ফলস এলাকায় একটি বাড়ির মূল্য ধরা হয়েছে প্রায় ৪৫ কোটি টাকা, আরেকটি বাড়ি ভার্জিনিয়ার ফলস চার্চ এলাকায়, যার মূল্য প্রায় ৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে দুই বাড়ির মূল্য দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৩ কোটি টাকার বেশি।

গাড়িগুলোর মধ্যে রয়েছে—মার্সিডিজ-বেঞ্জ এস-ক্লাস, এসএল-ক্লাস, লেক্সাস জিএক্স ৪৬০, ল্যান্ড রোভার, ম্যাকলারেন ৭২০এস, মার্সিডিজ-বেঞ্জ এমজি জিটি এবং দুটি জিপ গ্র্যান্ড চেরোকি। এসব গাড়ির আনুমানিক মূল্য প্রায় ৪ লাখ ৪৩ হাজার মার্কিন ডলার।

এছাড়া জয়ের নামে শনাক্ত ছয়টি কোম্পানির মধ্যে রয়েছে—গোল্ডেন বেঙ্গল প্রোডাকশন্স, প্রাইম হোল্ডিং, ওয়াজেদ ইন, অসিরিস ক্যাপিটাল পার্টনার্স, ব্লু হেভেন ভেনচারস এবং ট্রুপে টেকনোলজিস। এসব কোম্পানি ও ব্যক্তিগত নামে খোলা সাতটি ব্যবসায়িক ও পাঁচটি ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবও জব্দের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) বরাতে দুদকের আবেদনে বলা হয়, “অভিযুক্ত সজীব আহমেদ ওয়াজেদ যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বিনিয়োগ করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়াই বিদেশে অর্থ স্থানান্তর করে সম্পত্তি ক্রয় করেছেন এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে আয়কর রিটার্নে তা গোপন করেছেন।”

গত ১৪ আগস্ট জয়কে আসামি করে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা দায়ের করে দুদক। মামলায় প্রায় ৬০ কোটির বেশি অবৈধ সম্পদের অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, “সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা প্রয়োজন মনে করলে অভিযুক্তের যেকোনো সম্পদ জব্দের উদ্যোগ নিতে পারেন।

এই কর্মকর্তা আরো বলেন, “সেক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি নিয়েই আবেদন করা হবে। মামলার বিচার চলাকালে জব্দ করা এসব সম্পদ আলামত হিসেবে উপস্থাপন করা হবে।”

দুদক বলছে, বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আয়ের উৎসের সব তথ্য আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করা বাধ্যতামূলক হলেও জয় তা ‘করেননি’ এবং বিদেশে অর্থ ‘পাচার’ করেছেন।

আরও পড়ুন