শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

| ১১ আশ্বিন ১৪৩২

ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় সরবরাহ ব্যাহত

জ্বালানি রপ্তানি বন্ধ করলো রাশিয়া

সমাজকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ১২:২৩, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

জ্বালানি রপ্তানি বন্ধ করলো রাশিয়া

রাশিয়া বছরের শেষ পর্যন্ত জ্বালানি রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করেছে। দেশটির অভ্যন্তরে ক্রমবর্ধমান জ্বালানি সংকট এবং ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় রিফাইনারি, পাম্পিং স্টেশন ও জ্বালানি বহনকারী ট্রেনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে শুধু রাশিয়ার অভ্যন্তরে নয়, দখলকৃত অঞ্চলগুলোতেও গ্যাস স্টেশনগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে, আর মানুষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
কিয়েভ গত গ্রীষ্ম থেকেই রাশিয়ার জ্বালানি স্থাপনাগুলোয় ড্রোন হামলা জোরদার করে। বিশেষ করে ছুটির মৌসুমে যখন জ্বালানি ব্যবহার বেড়ে যায়, তখন এসব আক্রমণ রাশিয়ার জ্বালানি সরবরাহ শৃঙ্খলে বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটিয়েছে। ইউক্রেনীয় বিমানবাহিনী সম্প্রতি বাশকির্তোস্তান অঞ্চলে গ্যাজপ্রম পরিচালিত একটি বড় রিফাইনারি ও কয়েকটি পাম্পিং স্টেশন টার্গেট করার দাবি করেছে।
মার্চে প্রথমবার আংশিকভাবে জ্বালানি রপ্তানি বন্ধ করেছিল মস্কো। জুলাইয়ে তা বিস্তৃত করে বড় সব উৎপাদককেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এবার উপ-প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক ঘোষণা করেছেন, বছরের শেষ পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। ডিজেল রপ্তানিতেও নতুন করে সীমাবদ্ধতা আসছে। নোভাক স্বীকার করেছেন, দেশে ‘হালকা জ্বালানি ঘাটতি’ তৈরি হয়েছে, তবে তা মজুদ থেকে সামাল দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছেন।
ডিজেল রপ্তানিতে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ উৎপাদক রাশিয়া। ফলে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা দেশটির অর্থনীতিতে বড় চাপ তৈরি করবে। প্রো-ক্রেমলিন সংবাদপত্র ইজভেস্তিয়া জানিয়েছে, রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে গ্যাস স্টেশনগুলো ইতিমধ্যেই রেশনিং শুরু করেছে—গ্রাহকদের সীমিত পরিমাণে জ্বালানি দেওয়া হচ্ছে।
দখলকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপে সংকট সবচেয়ে তীব্র। কোমেরসান্ত জানিয়েছে, সেখানে প্রায় অর্ধেক পাম্প বন্ধ হয়ে গেছে। সেভাস্তোপোল শহরে তো একসময় পুরোপুরি গ্যাসোলিন শেষ হয়ে যায়। সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার হওয়া ভিডিও ও ছবিতে দেখা গেছে, ট্যাঙ্কার পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে বিশাল লাইন তৈরি হচ্ছে এবং কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মজুদ ফুরিয়ে যাচ্ছে। দামও এক মাসের মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বেড়েছে। জনপ্রিয় টেলিগ্রাম চ্যানেল ক্রিমিয়ান উইন্ড ব্যঙ্গ করে লিখেছে—“এখনও খড়ের লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে না, ঘোড়া-গাধার দামও স্থিতিশীল।”
রাশিয়ার ভেতরে জ্বালানি ঘাটতির স্বীকারোক্তি মস্কোর জন্য কৌশলগত ও অর্থনৈতিক চাপের নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলা কার্যত রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ জ্বালানি নিরাপত্তাকে ভেঙে দিচ্ছে, যার অভিঘাত দীর্ঘমেয়াদে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারেও পড়তে পারে।
 

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন