ইতিহাস গড়ে ইউনেসকোর সাধারণ পরিষদের সভাপতি বাংলাদেশ
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ২১:৩৬, ৭ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২৩:১২, ৭ অক্টোবর ২০২৫

বাংলাদেশের কূটনৈতিক অঙ্গনে যুক্ত হলো আরেকটি গৌরবের অধ্যায়। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থায় (ইউনেসকো) বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম তালহা নির্বাচিত হয়েছেন ৪৩-তম সাধারণ পরিষদের সভাপতি।
প্যারিসভিত্তিক সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের ২২২-তম অধিবেশনে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত ভোটে রাষ্ট্রদূত তালহা ৩০ ভোট পেয়ে জাপানের প্রতিনিধি তাকেহিরো কানো-কে (২৭ ভোট) পরাজিত করেন। প্রাথমিক পর্যায়ে ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও গত সেপ্টেম্বরে তারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেয়।
ইউনেস্কোর ৫৩ বছরের সদস্যপদের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো বাংলাদেশি এই মর্যাদাপূর্ণ পদে নির্বাচিত হলেন। তালহা আগামী অক্টোবরের শেষের দিকে উজবেকিস্তানের সামারকান্দে শুরু হতে যাওয়া অধিবেশনে রোমানিয়ার রাষ্ট্রদূত সিমোনা মিরেলা মিকুলেস্কু-র স্থলাভিষিক্ত হবেন এবং পরবর্তী দুই বছর দায়িত্ব পালন করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১৫-তম ব্যাচের কর্মকর্তা খন্দকার এম তালহা তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি নিউইয়র্ক, তেহরান, জেনেভা ও লন্ডনে বাংলাদেশের মিশনে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং সদর দপ্তরে রাষ্ট্রচার প্রধান ও মহাপরিচালক (পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল) হিসেবেও দায়িত্বে ছিলেন।
২০২১ সালে তালহা ফ্রান্স, মোনাকো ও আইভরি কোস্টে রাষ্ট্রদূত এবং ইউনেসকোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত হন।
রাষ্ট্রদূত তালহার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ইউনেসকোর নির্বাহী বোর্ডসহ ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে জয় পায়। তিনি “ঢাকার রিকশা ও রিকশা শিল্প”-কে দেশের অমূল্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ে মুখ্য ভূমিকা রাখেন।
এ ছাড়া তালহা ইউনেসকোর এসডিজি-৪ (শিক্ষা) বাস্তবায়নে উচ্চপর্যায়ের স্টিয়ারিং কমিটির শেরপা হিসেবে দুই মেয়াদ দায়িত্ব পালন করেন এবং শিক্ষা-সংস্কৃতির জন্য নিম্ন-আয়ের দেশগুলোর বৈশ্বিক তহবিল গঠনে সক্রিয়ভাবে কাজ করেন।
নির্বাচনের পর এক বিবৃতিতে রাষ্ট্রদূত তালহা প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা পরিষদ, বিশেষ করে পররাষ্ট্র ও সংস্কৃতি উপদেষ্টাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এবং ইউনেসকোর নির্বাহী বোর্ডের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
তিনি বলেন, "এই অর্জন বাংলাদেশের কূটনীতির জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। বহুপাক্ষিক কূটনীতির এই সংকটময় সময়ে ইউনেসকোর ম্যান্ডেট রক্ষা ও জ্ঞান, শিক্ষা এবং সংস্কৃতির বিস্তারে আমি নিরলসভাবে কাজ করে যাব।”