দুদকের মামলায় আসাদুজ্জামান নূরের জামিন নামঞ্জুর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫:২০, ১২ অক্টোবর ২০২৫

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী ও খ্যাতনামা অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর-এর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
রবিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আজিজুল হক দিদার, যিনি জানান, “দুদকের মামলায় জামিন শুনানির সময় আমরা জামিনের বিরোধিতা করি। উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন।”
গত ৩০ জুলাই, দুদকের উপপরিচালক মো. আজিজুল হক বাদী হয়ে ঢাকার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, আসাদুজ্জামান নূর ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। পাশাপাশি তার নামে থাকা ১৯টি ব্যাংক হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
দুদকের অনুসন্ধান অনুযায়ী, ২০০৩-০৪ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষে নূরের বৈধ আয় ছিল প্রায় ৩২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা, ব্যয় হয়েছে ৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা, ফলে নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় প্রায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। কিন্তু তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ২৯ কোটি টাকার বেশি, যার মধ্যে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি।
এছাড়া তার বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ টাকা উত্তোলন হয়েছে, যা দুদকের মতে, ‘অস্পষ্ট উৎসের লেনদেন’।
এর আগে ১৫ সেপ্টেম্বর, আদালত নূরের ৪টি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দের আদেশ দেন এবং তার ১৬টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়। পরবর্তীতে ২২ সেপ্টেম্বর তাকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় এবং আজ জামিন শুনানির দিন নির্ধারণ ছিল।
২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। তিনি ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালেও নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর তিনি সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের অংশ হিসেবেই নূরকে গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলি রোডের নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।