নাসিমের বিরুদ্ধে ইসি ও স্বরাষ্ট্রে দুদকের চিঠি
কানাডার নাগরিক হয়েও এমপি!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮:২৪, ১১ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২০:০৩, ১১ অক্টোবর ২০২৫

ফেনী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম এবং তার স্ত্রী ডা. জাহানারা আরজুর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে এখন পর্যন্ত দুজনের কেউ গ্রেপ্তার হননি।
দুদক জানিয়েছে, নাসিমের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
গত ১৯ মার্চ দুদকের নোয়াখালী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল নোমান বাদী হয়ে ফেনীর বিশেষ জজ আদালতে দুটি মামলা করেন।
মামলায় নাসিমের বিরুদ্ধে ৭৪ কোটি ৫২ লাখ ১৭ হাজার ৭৫৭ টাকা এবং তার স্ত্রী ডা. আরজুর বিরুদ্ধে ১২ কোটি ৪৭ লাখ ২৬ হাজার ১৮৯ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, নাসিম কানাডার নাগরিকত্ব লাভের পরও ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন।
বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বিদেশি নাগরিকত্বধারী কেউ সংসদ সদস্য বা মন্ত্রী হতে পারেন না।
দুদক সূত্র জানায়, অনুসন্ধান টিমের প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে—নাসিমের কানাডায় বাড়ি, ব্যবসা ও বিপুল সম্পদ রয়েছে। এমনকি তার বিরুদ্ধে দেশের বাইরে বড় অঙ্কের অর্থ পাচারেরও প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই কারণে নির্বাচন কমিশন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে তাদের নিজ নিজ এখতিয়ার অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, “নাসিমের দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। নাগরিকত্ব সংক্রান্ত ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের, তাই চিঠি দেওয়া হয়েছে।”
১৯৮৬ সালে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দিয়ে ২০০৯ সালে যুগ্ম সচিবের পদ থেকে অবসর নেন নাসিম। পরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং ২০২৪ সালে ফেনী-১ আসন থেকে এমপি হন।
রাজনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ফেনীতে নিজাম হাজারীর প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও “গডফাদার” হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি।
স্থানীয়দের মতে, শেখ হাসিনার সাবেক প্রটোকল অফিসার হিসেবেই নাসিম পরিচিত ছিলেন; পরে তিনি শেখ রেহানার ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন এবং অনেকেই তাকে “ফান্ড ম্যানেজার” বলেও আখ্যা দেন।
অভিযোগ রয়েছে, নাসিমের নির্দেশেই চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, স্বর্ণ ও মাদক পাচার এবং গরু চোরাচালান পরিচালিত হতো। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তার নির্দেশে ফেনীর মহিপালে গুলিতে ১৩ জন নিহত হয় বলে মামলায় উল্লেখ রয়েছে।