৪০ বছর পর সমুদ্রতটে তিন বোনের ছবি পুনর্নির্মাণ
মুহুর্তেই ভাইরাল
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ০০:২৩, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

১৯৮০–এর দশকের শুরুর দিক। কর্নওয়ালের ক্যাসেল বিচে রোদঝলমলে দুপুর। তিন বোন—ট্রেসি ওয়েগুড, এলেইন ম্যাককার্টনি ও পামেলা কুক—হাসি-ঠাট্টায় ভরা মুহূর্তে বসেছিলেন একসঙ্গে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে, হাতে আলুর চিপসের প্যাকেট, সামনে পিকনিক কম্বল—সেই ছবিই হয়ে উঠেছিল তাদের পারিবারিক সম্পর্কের প্রতীক।
পামেলা কুক বললেন, “ওই ছবিটাই আসলে আমাদের তিন বোনের পরিচয়কে ধরে রেখেছে—হাসি, ভালোবাসা আর একাত্মতা।”
৪০ বছরের অপেক্ষার পর
দীর্ঘদিন ধরে কুক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন—একদিন ছবিটি হুবহু আবার তোলা হবে। অবশেষে গত গ্রীষ্মে তিন বোন আবার সমবেত হলেন একই সমুদ্রতটে। এবার বয়স ষাটের কোঠা পেরোনো, তবু উদ্দীপনা আগের মতোই।
মেঘলা আকাশ, ঠান্ডা হাওয়া—তবু তারা দ্বিধা করেননি। সমুদ্রস্নানের পর, হাতে প্যাকেট, কম্বল বিছিয়ে সেই পুরোনো মুহূর্ত আবার ফিরিয়ে আনলেন।
সময়ের তাগিদ
এই পুনর্নির্মাণের পেছনে একটি আবেগী কারণও রয়েছে। কয়েক বছর আগে এলেইন ম্যাককার্টনির ডিমেনশিয়া ধরা পড়ে। বড় বোন ট্রেসি ও পামেলা জানতেন—সময়কে আর ফসকে যেতে দেওয়া যাবে না।
“আমরা জানি সময় মূল্যবান। তাই যতদিন পারি, একসঙ্গে আনন্দ করতে চাই,” বললেন ট্রেসি।
ক্যাসেল বিচের টান
কর্নওয়ালের ফ্যালমাউথ শহরের এই সৈকত তাদের শৈশবের স্মৃতিভূমি। ছয় ভাইবোন, মা-বাবা, কাজিন—সবাই মিলে কাটানো অগণিত গ্রীষ্মকালীন দিন। বিদেশ ভ্রমণের স্বপ্ন ছিল না; কর্নওয়ালের সৌন্দর্যই ছিল তাদের আনন্দভূমি। আজও এলেইন সেখানেই থাকেন, বাকিরা থাকেন কিছুটা দূরে। কানাডায় থাকা ভাইবোনদের সঙ্গে যুক্ত হন ভিডিও কলে।
নতুন ছবির গল্প
ছবি তোলার জন্য সাহায্য করেন ক্যাসেল বিচ ক্যাফের এক কলেজছাত্রী কর্মী জেস লয়ডেল। পুরোনো ছবিটি হাতে নিয়ে তিনি তিন বোনকে নিখুঁতভাবে বসিয়ে দেন।
রঙে মিল না থাকলেও ভঙ্গিতে কোনও ঘাটতি ছিল না। আর হাসি? সেটি স্বতঃস্ফূর্তভাবেই ফুটে ওঠে—যেন চার দশক আগের সেই বিকেল ফিরে এসেছে।
ভাইরাল ভালোবাসা
ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই ঝড় তুলেছে। পরিবার-পরিজন থেকে শুরু করে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম পর্যন্ত সবার প্রশংসা। কানাডায় থাকা ভাতিজা-ভাতিজিরাও গর্বভরে লিখেছেন—“এরা আমাদের মজার খালা-পিসিরা।”
ক্যাসেল বিচ ক্যাফেও তাদের ছবি নিজেদের পেজে শেয়ার করেছে। এভাবেই তিন বোনের ভালোবাসা-ভরা মুহূর্ত ছড়িয়ে পড়েছে সারা দুনিয়ায়।