জাতিসংঘের তীব্র সমালোচনা
মার্কিন নৌবাহিনীর ‘ড্রাগবিরোধী হামলা’ মানবাধিকার লঙ্ঘন, অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১০:৪৯, ১ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৩:৪৫, ১ নভেম্বর ২০২৫
জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক শুক্রবার বলেছেন, দক্ষিণ আমেরিকা থেকে অবৈধ মাদকবাহী নৌকা টার্গেট করে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান ও নৌ হামলাগুলো ‘অগ্রহণযোগ্য’ এবং তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, এসব হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করছে এবং এর ফলে বহু প্রাণহানি ঘটছে।
জাতিসংঘ দপ্তরের মুখপাত্র রবিনা শামদাসানি জানান, টুর্ক বলেছেন— “এই হামলাগুলো এবং এর ফলে বেড়ে চলা মানবিক ক্ষয়ক্ষতি একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। যুক্তরাষ্ট্রকে এসব হামলা বন্ধ করতে হবে এবং নৌকায় থাকা মানুষের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এসব সামরিক হামলা কোনো যুদ্ধক্ষেত্র বা সক্রিয় সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ঘটছে না, ফলে তা সশস্ত্র সংঘাতের আইনি পরিসরের বাইরেই পড়ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগে বলেছেন, এই হামলাগুলো যুক্তরাষ্ট্রে মাদক প্রবাহ রোধের জন্য “প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ”। তবে লাতিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি দেশ এ অভিযানকে ‘বিতর্কিত ও বিপজ্জনক’ হিসেবে দেখছে।
সম্প্রতি ট্রাম্প জাপানে ইউএসএস জর্জ ওয়াশিংটন এ অবস্থানকালে জানান, “আমরা সমুদ্রপথে মাদক আসা বন্ধ করেছি, এবার স্থলপথেও তা বন্ধ করব।”
প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বুধবার জানান, পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে একটি নৌকায় আঘাত হানার সর্বশেষ হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত এমন ১৪টি হামলা চালানো হয়েছে, যাতে কমপক্ষে ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
জাতিসংঘের বিবৃতিতে বলা হয়, মাদকবিরোধী অভিযান অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রিত সীমার মধ্যে পরিচালিত হতে হবে। প্রাণঘাতী বলপ্রয়োগ কেবলমাত্র তখনই বৈধ, যখন তাৎক্ষণিক জীবন-হুমকি বিদ্যমান থাকে। অন্যথায় এসব আক্রমণ “বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের” পর্যায়ে পড়ে।
জাতিসংঘের এই নিন্দা আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রথমবারের মতো এমন এক অবস্থান নির্দেশ করছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের মাদকবিরোধী অভিযানের মানবাধিকার দিকটি প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
