নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে আহত বিজিবি নায়েকের মৃত্যু
উখিয়া-টেকনাফ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০:২৬, ৩১ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২১:৫৪, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
 
						
									বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের বাইশফাঁড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হওয়া বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর নায়েক আক্তার হোসেন অবশেষে মারা গেছেন। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই সন্তান এবং অসংখ্য সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন।
গত ১১ অক্টোবর সকালে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি সীমান্ত পিলার-৪০ এর কাছে নিয়মিত টহল দিচ্ছিলেন বিজিবির সদস্যরা। টহলের একপর্যায়ে নো-ম্যানস ল্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় হঠাৎ একটি ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরিত হয়। এতে বিজিবি নায়েক আক্তার হোসেন গুরুতরভাবে আহত হন। বিস্ফোরণে তার ডান পা সম্পূর্ণ উড়ে যায় এবং বাম পা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সহকর্মীরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার সিএমএইচে স্থানান্তর করেন।
চিকিৎসকরা টানা ২০ দিন ধরে তাকে বাঁচানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালালেও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও সংক্রমণের কারণে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার দুপুরে এই সাহসী সৈনিক শহীদের মর্যাদায় মৃত্যুবরণ করেন।
বিজিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, “দেশের সীমান্ত নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালনকালে নায়েক আক্তার হোসেন নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। আমরা তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে রয়েছি।”
সংস্থাটি জানিয়েছে, আক্তার হোসেনকে যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে।
নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দীর্ঘদিন ধরেই অস্থিতিশীল ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে পরিচিত। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের অভ্যন্তরে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সংঘর্ষ বেড়ে যাওয়ায় প্রায়ই সীমান্তের নো-ম্যানস ল্যান্ডে গুলিবর্ষণ, মর্টারশেল নিক্ষেপ ও মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সীমান্তের বিভিন্ন স্থানে মিয়ানমারের দিক থেকে অব্যবহৃত মাইন ছড়িয়ে রয়েছে—যেগুলো সীমান্তরক্ষীদের জন্য স্থায়ী হুমকি হয়ে উঠছে।
নায়েক আক্তার হোসেনের মৃত্যুর খবর তার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে শোকের ছায়া নেমে আসে। স্বজন ও প্রতিবেশীরা জানান, তিনি ছিলেন একজন সাহসী, দায়িত্বশীল ও দেশপ্রেমিক সৈনিক। সীমান্তে দায়িত্ব পালনকালে সর্বদা দেশের প্রতি অগাধ ভালোবাসা ও কর্তব্যনিষ্ঠা দেখিয়েছেন তিনি।
 

 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													