অধিকারের প্রতিবেদন
অন্তর্বর্তী সরকারের ১৪ মাসে ৪০ জন বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭:০২, ৩১ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৭:১০, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
 
						
									জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকে দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের ১৪ মাসে দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে ৪০ জনের মৃত্যু ঘটেছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা অধিকার। সংস্থাটির সাম্প্রতিক ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
গত বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৯ আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নয়টি হত্যাকাণ্ড ঘটে গত বছরের সেপ্টেম্বরে, আর গত তিন মাসে ঘটে আরও ১১টি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ৯ আগস্টের পর আগস্ট মাসে কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়নি। তবে পরের মাসেই নয়জন নিহত হন।
অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে একজন করে মারা যান।
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে নিহত হন পাঁচজন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন, মার্চ ও এপ্রিলে দুজন করে, মে মাসে চারজন, জুনে তিনজন, জুলাইয়ে ছয়জন, আগস্টে তিনজন এবং সেপ্টেম্বরে দুজন।
এই ৪০ জনের মধ্যে ১৯ জন গুলিতে, ১৪ জন নির্যাতনে এবং ৭ জন পিটিয়ে নিহত হয়েছেন।
গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সর্বশেষ তিন মাসে নিহত ১১ জনের ঘটনায় পুলিশ, সেনা সদস্য ও যৌথ বাহিনীর সংশ্লিষ্টতা উল্লেখ করেছে অধিকার।
অধিকারের প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৪ মাসে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ৭ হাজার ৯৭৯টি।
সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটে ২০২৫ সালের মার্চে—৯৪৪টি। এরপর এপ্রিল, জুন, জুলাই ও আগস্টেও প্রায় সমান সংখ্যক সংঘর্ষ ঘটে।
এই সময়কালে রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হয়েছেন ২৮১ জন, যার মধ্যে মার্চে এক মাসেই প্রাণ হারান ৪৪ জন।এ সময় মব সন্ত্রাসে নিহত হয়েছেন ১৫৩ জন, যার মধ্যে সেপ্টেম্বরে সর্বাধিক ১৮টি ঘটনা ঘটে।
অধিকারের হিসেবে, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে ২৪২টি।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩৪টি ঘটনা ঘটেছে গত সেপ্টেম্বরে।
এছাড়া মার্চে ৩০টি, মে মাসে ২৮টি, আগস্টে ২৬টি এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫টি হামলার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।
অধিকার ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান—যিনি এই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা—এর তত্ত্বাবধানে মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় দণ্ডিত হলেও জুলাই অভ্যুত্থানের পর হাইকোর্ট তাকে খালাস দেন।
অধিকারের এই প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে আবারও দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে উদ্বেগের সুর তোলা হলো।
 

 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													