মহারাষ্ট্রের সব স্কুলে বাধ্যতামূলক করল বিজেপি সরকার
বন্দে মাতরম’ গাইতে হবে পুরোটাই
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭:২০, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
 
						বিজেপ ‘র দলীয় পতাকা। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের মহারাষ্ট্রের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখন থেকে পুরো ‘বন্দে মাতরম’ গাওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর এক সরকারি নির্দেশিকায় জানিয়েছে— ১৮৭৫ সালে রচিত এই জাতীয় স্তোত্রের দেড়শো বছর পূর্তি উপলক্ষে ৩১ অক্টোবর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি চলবে।
এই সময়কালে রাজ্যের সব সরকারি ও বেসরকারি, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘বন্দে মাতরম’-এর সম্পূর্ণ অংশ গাওয়া হবে। পাশাপাশি স্কুলে স্কুলে এর ইতিহাস, সাহিত্যিক তাৎপর্য ও জাতীয় আন্দোলনে এর ভূমিকা নিয়ে প্রদর্শনী আয়োজনের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
এই নির্দেশের বিরোধিতা করেছেন সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক আবু আজ়মি। তার বক্তব্য, “সব ধর্মের মানুষের বিশ্বাস ভিন্ন। ইসলাম ধর্মে মাকে সম্মান জানাতে বলা হয়েছে, কিন্তু প্রণাম করতে বলা হয়নি। কাউকে জোর করে এমন কাজ করানো উচিত নয়।”
তবে বিজেপির তরফে তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে। দলের মিডিয়া সেলের প্রধান নবনাথ বান বলেছেন, “যদি আবু আজ়মির মতো কারও ‘বন্দে মাতরম’-এ সমস্যা থাকে, তাহলে তিনি পাকিস্তান বা নিজের পছন্দের অন্য দেশে চলে যেতে পারেন। ভারতে থাকতে হলে জাতীয় স্তোত্রকে সম্মান জানাতেই হবে।”
এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার রেডিও ভাষণ ‘মন কি বাত’-এ বলেন, “‘বন্দে মাতরম’ এমন একটি ধ্বনি যা ভারতের ১৪০ কোটি মানুষকে একত্রিত করার ক্ষমতা রাখে। এটি কেবল গান নয়, এক অদম্য আবেগ ও শক্তির প্রতীক।”
তিনি আরও বলেন, “এই মহান গান ও এর রচয়িতা বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অবদান স্মরণে প্রত্যেকে অংশ নিক সার্ধশতবর্ষ উদযাপনে।”
‘বন্দে মাতরম’ প্রথম রচিত হয় ১৮৭৫ সালে, পরবর্তীতে ১৮৮২ সালে প্রকাশিত ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসে অন্তর্ভুক্ত হয়। ব্রিটিশ শাসনের কঠিন সময়ে গানটি স্বাধীনতার আন্দোলনে বিপুল অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল।
১৯৫০ সালে ভারতের সংবিধানে এটি জাতীয় স্তোত্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়। সাধারণত স্কুলে শুধু প্রথম দুটি স্তবক গাওয়া হতো, এবার মহারাষ্ট্র সরকার ঘোষণা করেছে পুরো গান গাওয়ার নির্দেশ।
শিক্ষা দফতরের বক্তব্য অনুযায়ী, এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো—ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে জাতীয় গানের প্রতি সম্মান ও ঐতিহ্যচেতনা বৃদ্ধি,বঙ্কিমচন্দ্রের সাহিত্য ও স্বাধীনতা সংগ্রামে তার অবদানকে স্মরণ এবং সাংস্কৃতিক ঐক্যের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম জাগানো।

 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													