যুক্তরাষ্ট্র–ভারত ১০ বছরের প্রতিরক্ষা চুক্তি
ট্রাম্পের শুল্ক উত্তেজনার মধ্যেও কৌশলগত অংশীদারত্বে নতুন যুগ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫:৩৬, ৩১ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৬:৪৪, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
 
						
									যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত পরবর্তী দশ বছরের জন্য প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সম্প্রসারণে একটি নতুন ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি সই করেছে। শুক্রবার কুয়ালালামপুরে দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠকের পর এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এবং ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং যৌথ বৈঠক শেষে এক বিবৃতিতে জানান, এই চুক্তি দুই দেশের মধ্যে ‘সমন্বয়, তথ্য আদান–প্রদান ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা’ বাড়াবে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করবে।
চুক্তি স্বাক্ষরের পর রাজনাথ সিং এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লেখেন,‘এটি আমাদের কৌশলগত ঐক্যের এক নতুন যুগের সূচনা করবে। প্রতিরক্ষা আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রধান স্তম্ভ হয়ে থাকবে। মুক্ত, উন্মুক্ত ও নিয়মভিত্তিক ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গঠনে ভারত–যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারিত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
এ চুক্তিটি দুই দেশের প্রতিরক্ষা সম্পর্কের সামগ্রিক কাঠামো ও নীতিগত দিকনির্দেশনা দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চুক্তিটি এমন এক সময় হয়েছে যখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছেন, যার মধ্যে রাশিয়া থেকে তেল ও অস্ত্র কেনার কারণে ২৫ শতাংশ বাড়তি জরিমানা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এর ফলে দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক কিছুটা টানাপোড়েনের মধ্যে থাকলেও, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা উভয়ের কৌশলগত আস্থা পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখছে।
ইউরেশিয়া গ্রুপের বিশ্লেষক প্রমিত পাল চৌধুরী জানান, এই চুক্তি মূলত জুলাই–আগস্টের মধ্যেই সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। তবে ট্রাম্পের পাকিস্তান সংকট মীমাংসায় নিজের ভূমিকা নিয়ে মন্তব্যে ভারতের অস্বস্তির কারণেই এটি বিলম্বিত হয়।
তিনি বলেন, ‘চুক্তিটি দুই দেশের সামরিক বাহিনীর পারস্পরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তি বিনিময় ও যৌথ উৎপাদনের ক্ষেত্র উন্মুক্ত করবে। তিন ক্ষেত্রেই সম্ভাবনা আরও বাড়বে।’
ভারত দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়ার অস্ত্রনির্ভর হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের অংশীদারিত্ব কমছে। দেশটি এখন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে।
মোদির ফেব্রুয়ারির ওয়াশিংটন সফরেও ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন যে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে কয়েক বিলিয়ন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম, এমনকি এফ–৩৫ স্টেলথ যুদ্ধবিমান সরবরাহে আগ্রহী।
চলমান বাণিজ্য আলোচনার পাশাপাশি এই প্রতিরক্ষা চুক্তি ভারত–মার্কিন সম্পর্ককে নতুন কৌশলগত উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে। নভেম্বরের মধ্যেই উভয় দেশ একটি পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্য চুক্তির পথেও অগ্রসর হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্র: বিবিসি

 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													