তুরস্কে মধ্যস্থতায় পাকিস্তান-আফগানিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১০:৫৯, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
 
						
									দক্ষিণ এশিয়ার দীর্ঘস্থায়ী উত্তেজনা প্রশমনে এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি ঘটেছে। তুরস্কে পাঁচ দিনের বৈঠক শেষে অবশেষে যুদ্ধবিরতি অব্যাহত রাখতে রাজি হয়েছে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। বৃহস্পতিবার রাতে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, “পাকিস্তান ও আফগানিস্তান উভয় দেশই যুদ্ধবিরতির ধারাবাহিকতা রক্ষায় সম্মত হয়েছে। আগামী ৬ নভেম্বর ইস্তাম্বুলে দুই দেশের প্রতিনিধি দল আবারও বৈঠকে বসবে। সে পর্যন্ত যেন কোনো ধরনের সংঘাত না ঘটে, সে বিষয়ে উভয় সরকারই সতর্ক থাকবে।”
দুই দেশের মধ্যে ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত — ডুরান্ড লাইন — বহুদিন ধরেই উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু। ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার প্রতিষ্ঠার পর থেকে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এর মূল কারণ তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) নামের সশস্ত্র গোষ্ঠী, যাদের পাকিস্তান নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও তারা আফগান সীমান্তে সক্রিয় রয়েছে।
ইসলামাবাদ দাবি করে, আফগান তালেবানরা টিটিপিকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। তবে কাবুল সরকার এ অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।
৯ অক্টোবর পাকিস্তান কাবুলে বিমান হামলা চালিয়ে টিটিপি প্রধান নূর ওয়ালি মেহসুদসহ শীর্ষ নেতাদের হত্যা করে। এর জবাবে ১১ অক্টোবর আফগান সেনারা সীমান্তবর্তী পাকিস্তানি সেনা পোস্টে হামলা চালায়। পাল্টা জবাব দেয় পাকিস্তানও।
১৪ অক্টোবর পর্যন্ত টানা সংঘাতে ২ শতাধিক আফগান সেনা ও ২৩ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হন। এরপর ১৫ অক্টোবর দুই দেশ ঘোষণা দেয় ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি।
১৮ অক্টোবর দোহায় শুরু হয় দুই দেশের সরকারি প্রতিনিধিদলের বৈঠক, যা পরে স্থানান্তরিত হয় তুরস্কের ইস্তাম্বুলে। সেখানে ২৫ অক্টোবর থেকে শুরু হয় মূল আলোচনা। কাতার ও তুরস্ক মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করে।
২৮ অক্টোবর এক পর্যায়ে বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হলেও মধ্যস্থতাকারীদের তৎপরতায় তা রক্ষা হয়। ২৯ অক্টোবর থেকে পুনরায় আলোচনায় বসে দুই দেশ এবং ৩০ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
৬ নভেম্বর ইস্তাম্বুলে আবার বৈঠকে বসবেন দুই দেশের প্রতিনিধি দল, যেখানে যুদ্ধবিরতির শর্তাবলি ও সীমান্ত সুরক্ষা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
তুরস্ক জানিয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে এই সমঝোতা একটি “গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সাফল্য”।

 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													