জুলাইবিরোধী ভূমিকা: ইবির ৩০ শিক্ষক-কর্মকর্তা বরখাস্ত
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১:১৫, ৩১ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ০০:২৭, ১ নভেম্বর ২০২৫
 
						
									জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হয়রানির অভিযোগে ‘শুদ্ধি অভিযান’ শুরু করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭১তম সিন্ডিকেট সভায় ৩০ জন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত এবং ৩৩ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর সনদ বাতিল ও বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সিন্ডিকেটের একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ১৫ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে, যার আহ্বায়ক ছিলেন আল-হাদীস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন। কমিটি প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য, ভিডিওচিত্র, সংবাদ প্রতিবেদন এবং অন্যান্য প্রমাণ বিশ্লেষণ করে ‘জুলাই-আগস্ট বিপ্লববিরোধী ও নিবর্তনমূলক কার্যকলাপে’ সরাসরি সংশ্লিষ্টতা পায় অভিযুক্তদের মধ্যে।
প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর অভিযুক্তদের কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়। পরিশেষে কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে সিন্ডিকেট চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়।
সাময়িক বরখাস্তদের মধ্যে রয়েছেন—
ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান, আইসিটি বিভাগের অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ ও ড. রবিউল হোসেন, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ড. কাজী আখতার হোসেন ও ড. শেলীনা নাসরিন, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আক্তারুল ইসলাম ও ড. মিয়া রাসিদুজ্জামানসহ আরও অনেকে।
এ ছাড়া প্রশাসন ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের কয়েকজন উপ-রেজিস্ট্রার, শাখা কর্মকর্তা ও ফটোগ্রাফি ইনচার্জসহ ৩০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীও বরখাস্ত হয়েছেন।
একই অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৩ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর মধ্যে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার এবং যাদের একাডেমিক কার্যক্রম শেষ তাদের সনদ বাতিল করা হবে।
তাদের মধ্যে রয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়, বিপুল খান, মেহেদী হাসান হাফিজ, রতন রায়, হুসাইন মজুমদার, তরিকুল ইসলাম, মৃদুল রাব্বী, শাকিল, আদনান আলী পাটোয়ারি, লিয়াফত ইসলাম রাকিব প্রমুখ।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক সূত্র জানায়, শিক্ষাঙ্গনে সহিংসতা বা আন্দোলন দমনমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত কারও জন্যই ছাড় নেই। এছাড়া আরও যেসব শিক্ষক বা কর্মকর্তা পেছন থেকে উসকানি বা দমনমূলক ভূমিকা রেখেছেন, তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলছে। পর্যায়ক্রমে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হয়রানির অভিযোগ ওঠে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সে সময় সংঘটিত ঘটনাগুলোর তদন্তে উঠে আসে একাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগ নেতার ভূমিকা।

 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													