সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির স্বর্গভূমি বাংলাদেশ : ধর্ম উপদেষ্টা
লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮:২৭, ১ নভেম্বর ২০২৫
লালমনিরহাটে আলোচনা সভায় ধর্ম উপদেষ্টা। ছবি : সমাজকাল
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ— মন্তব্য করেছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। তিনি বলেন, “আমাদের নিকটতম প্রতিবেশি দেশ ভারত কিংবা মিয়ানমারের দিকে তাকালেই বোঝা যায়, বাংলাদেশ প্রকৃত অর্থেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির স্বর্গভূমি। এদেশে সংঘাত রাজনীতিক কারণে ঘটে, সাম্প্রদায়িক কারণে নয়।”
শনিবার (১ নভেম্বর) লালমনিরহাট জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে জেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্ম উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
একসাথে যুদ্ধ, একসাথে উন্নয়ন
ড. খালিদ বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ বহু ধর্ম ও সম্প্রদায়ে বিভক্ত হলেও আমরা একই সংস্কৃতির মানুষ। স্কুল-কলেজ, কর্মক্ষেত্র, এমনকি মুক্তিযুদ্ধেও আমরা একসাথে ছিলাম। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে যেমন ঐক্যবদ্ধভাবে লড়েছি, তেমনি ২৪ জুলাইয়ের বিপ্লবেও আমরা একত্রে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করেছি।”
তিনি আরও বলেন, “এই দেশ আমাদের সবার। একজন মুসলমানের যেমন অধিকার আছে, তেমনি একজন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান বা নৃগোষ্ঠীরও সমান অধিকার রয়েছে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো, যাতে কেউ কারও অধিকারে হস্তক্ষেপ না করতে পারে।”
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির গুরুত্ব তুলে ধরে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, “যে দেশে গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাত থাকে, সেখানে উন্নয়ন কখনও সম্ভব নয়। বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না, পর্যটনও বিকশিত হবে না। উন্নত বাংলাদেশ গড়তে হলে সকল ভেদাভেদ ভুলে একসাথে কাজ করতে হবে।”
লালমনিরহাটকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উর্বর ভূমি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এখানে মসজিদ, মন্দির ও গীর্জায় কোনো বিবাদ নেই, নেই বিভেদ। এই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশকে আরও দৃঢ় করতে হবে।”
তিনি জেলার সামাজিক সমস্যা— বিশেষত মাদকাসক্তি ও কিশোর গ্যাং-নিয়ন্ত্রণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
গত ১৭ বছরে লালমনিরহাটে উন্নয়নের অগ্রগতি না হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করে ড. খালিদ বলেন, “আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমন প্রতিনিধি নির্বাচন করুন, যিনি লালমনিরহাটকে সত্যিই সোনায় মুড়িয়ে দিতে পারেন। আমরা অভিযোগ নয়, কাজ দেখতে চাই।”
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ইসলামী দৃষ্টান্ত তুলে ধরে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, “মহানবী (সা.) যুদ্ধে অংশ নিলেও কখনও নির্বিচারে হত্যার অনুমতি দেননি। নারী, শিশু, মন্দির ও গীর্জায় অবস্থানকারীদের উপর আক্রমণ নিষিদ্ধ করেছেন। এ থেকেই বোঝা যায়, ইসলাম প্রকৃত সম্প্রীতির ধর্ম।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার মো. তরিকুল ইসলাম, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মমিনুল হক, জামায়াতে ইসলামী জেলা নায়েবে আমীর মো. হাবিবুর রহমান, ও বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এইচ এম বরকতুল্লাহ।
