প্রিন্স অ্যান্ড্রু, তার প্রাক্তন স্ত্রী ও কন্যারা এখন কী সুবিধা পাবেন?
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১১:৩২, ১ নভেম্বর ২০২৫
ব্রিটিশ রাজপরিবারে এক ঐতিহাসিক পরিবর্তন। যৌন কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানোয় রাজা তৃতীয় চার্লস তার ভাই প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সব রাজকীয় খেতাব ও সুবিধা বাতিল করেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে বাকিংহাম প্যালেসের এক বিবৃতিতে জানানো হয়— এখন থেকে তিনি কেবল ‘অ্যান্ড্রু মাউন্টব্যাটেন উইন্ডসর’ নামে পরিচিত হবেন। অর্থাৎ, আর ‘প্রিন্স’ বা ‘ডিউক অফ ইয়র্ক’ উপাধি ব্যবহার করতে পারবেন না।
রাজা চার্লস শুধু খেতাবই নয়, বরাদ্দ রাজকীয় বাসভবন ‘রয়্যাল লজ’-এ বসবাসের অধিকার এবং রাজপরিবারের ভাতাও বাতিল করেছেন। বিবিসি জানায়, রাজা পুত্র প্রিন্স উইলিয়ামের তীব্র চাপে এই সিদ্ধান্ত নেন। কারণ, অ্যান্ড্রুর নাম যুক্ত হওয়ায় রাজপরিবারের ভাবমূর্তি ক্রমেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল।
কোথায় থাকবেন অ্যান্ড্রু ও তার পরিবার
রয়্যাল লজ ছাড়ার নির্দেশ পাওয়ার পর অ্যান্ড্রু, তার প্রাক্তন স্ত্রী সারা ফার্গুসন এবং তাদের দুই কন্যা— প্রিন্সেস বিট্রিস ও ইউজেনির জন্য বিকল্প বাসস্থান বরাদ্দ করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, তারা নরফোকের স্যান্ড্রিংহাম এস্টেটে থাকবেন। প্রয়াত প্রিন্স ফিলিপের মালিকানাধীন এই ২০ হাজার একর জমি ও প্রাসাদের খরচ ব্যক্তিগতভাবে বহন করবেন রাজা চার্লস।
উপাধি হারালেও রক্তসূত্র অটুট
অ্যান্ড্রু-সারার বিবাহবিচ্ছেদের পর সারা আগেই ‘ডাচেস অফ ইয়র্ক’ উপাধি হারিয়েছিলেন। তবে তাদের দুই কন্যা এখনও ‘প্রিন্সেস’ উপাধি ব্যবহার করতে পারবেন— কারণ রাজা পঞ্চম জর্জের ১৯১৭ সালের ‘লেটারস পেটেন্ট’-এ এ অধিকার বহাল আছে।
অ্যান্ড্রু রাজকীয় মর্যাদা হারালেও রাজসিংহাসনের উত্তরাধিকার তালিকায় তিনি অষ্টম স্থানে থাকবেন, বিট্রিস নবম এবং ইউজেনি দশম স্থানে। তবে রাজপরিবারের আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে সদস্য হিসেবে অংশ নেওয়ার সুযোগ তাদের থাকবে না।
অর্থনৈতিক অবস্থা ও বিতর্কের পটভূমি
সরকারি তহবিল থেকে আর কোনো ভাতা পাবেন না অ্যান্ড্রু ও সারা। তবুও অ্যান্ড্রু আর্থিকভাবে স্বচ্ছল— একজন প্রাক্তন সেনা কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী হিসেবে তার সম্পদে রয়েছে ডাচ স্টার্টআপসহ বহু আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ।
তবে তার পতনের মূল কারণ আমেরিকার কুখ্যাত যৌন অপরাধী জেফ্রি এপস্টিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। ভার্জিনিয়া জিওফ্রে নামে এক নারীর অভিযোগ অনুযায়ী, অ্যান্ড্রু নাবালিকাদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন— যদিও তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বিবিসির প্রাক্তন রাজপরিবার বিষয়ক সাংবাদিক জেনি বন্ডের ভাষায়, “বাকিংহামের বিবৃতির ভাষা নজিরবিহীন। ব্রিটিশ রাজতন্ত্রে এই মাত্রার কঠোরতা আগে দেখা যায়নি।”
