তালেবানের দাবি
আইএসআইএসকে আশ্রয় দিচ্ছে ইসলামাবাদ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬:২৮, ১২ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ০০:৩৮, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। কাবুলে হামলার পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক টানাপড়েনের মধ্যে ছিল। এবার সেই উত্তেজনা রূপ নিল রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। আফগানিস্তানের তালেবান সরকার জানিয়েছে, ডুরান্ড লাইনে রাতভর তীব্র সংঘর্ষে ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত ও অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইসলামাবাদও সীমান্তে একাধিক পয়েন্ট বন্ধ ঘোষণা করেছে।
তালেবানের অভিযোগ: ইসলামাবাদ আশ্রয় দিচ্ছে আইএসআইএসকে
আফগান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন—ইসলামাবাদ নিজ ভূখণ্ডে আইএসআইএস (ইসলামিক স্টেট)-এর সদস্যদের আশ্রয় ও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। তার দাবি, খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে নতুন করে আইএসআইএস ঘাঁটি স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে করাচি ও ইসলামাবাদ বিমানবন্দর থেকে নতুন সদস্যদের নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
মুজাহিদ বলেন, “পাকিস্তানের উচিত অবিলম্বে ওই সন্ত্রাসীদের বহিষ্কার করা অথবা ইসলামিক আমিরাতের হাতে তুলে দেওয়া। ইসলামাবাদে আশ্রিত এই সন্ত্রাসীরাই তেহরান ও মস্কো হামলার পরিকল্পনা করেছে এবং আফগানিস্তানেও হামলার ষড়যন্ত্র করছে।”
আফগান সামরিক সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে আফগান সেনারা নাঙ্গারহার ও কুনার প্রদেশে পাকিস্তানি সামরিক পোস্টে হামলা চালায়। এতে তিনটি পাকিস্তানি ফাঁড়ি দখল করে তারা এবং বিপুল অস্ত্র ও গোলাবারুদ বাজেয়াপ্ত করে। তালিবান বাহিনী জানিয়েছে, এটি ছিল কাবুলে পাকিস্তানি বিমান হামলার প্রতিশোধমূলক অভিযান।
হেলমান্দ প্রদেশের মুখপাত্র মাওলাভি মোহাম্মদ কাসিম রিয়াজ বলেন, “আমাদের বাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রতিশোধ নিয়েছে। আফগান ভূখণ্ডে পাকিস্তানের বিমান হামলার জবাব দেওয়া হয়েছে।”
সীমান্ত বন্ধ ও যুদ্ধাবস্থা
পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেওয়ায় পাকিস্তান রবিবার সীমান্তের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথ তোরখাম ও চামান ক্রসিংসহ পাঁচটি স্থলপথ বন্ধ করে দিয়েছে। খাইবার-পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশজুড়ে সেনা সতর্কাবস্থা জারি করা হয়েছে।
অন্যদিকে, কাবুল জানিয়েছে, ইসলামাবাদ যদি আইএসআইএসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নেয়, তবে আরও কঠোর সামরিক প্রতিক্রিয়া দেওয়া হবে।
দুই পারমাণবিক প্রতিবেশীর এই সংঘর্ষ নিয়ে ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। জাতিসংঘের একাধিক সংস্থা জানিয়েছে, সীমান্ত অঞ্চলে বেসামরিক মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা বাড়ছে।