গাজায় ৬ লক্ষাধিক শিশুকে লেখাপড়ায় ফেরানোর সংগ্রাম
মাইসারা জান্নাত
প্রকাশ: ০০:১৮, ১৯ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ০০:৩১, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
ছবি: আল-জাজিরা
গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর ৬ লক্ষাধিক শিশুর শিক্ষা কার্যক্রমকে স্বাভাবিক করার জন্য জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় এটি এক নতুন সংগ্রাম। টানা দুই বছর স্কুল বন্ধ থাকায় শিশুরা শুধু পড়াশোনা থেকেই বঞ্চিত হয়নি, তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও পড়েছে চরম প্রভাব।

ছবি: আল-জাজিরা
বোমাবর্ষণের আতঙ্ক, বাস্তুচ্যুতি, খাদ্য ও পানীয়ের খোঁজে তাদের সময় কেটেছে, যা তাদের স্বাভাবিক শৈশবের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। যুদ্ধবিরতির সুযোগ কাজে লাগিয়ে মানবিক সাহায্য সংস্থাগুলো এখন যত দ্রুত সম্ভব অস্থায়ী স্কুল চালুর জন্য রাতদিন কাজ করছে।

ছবি: আল-জাজিরা
জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের আগ্রাসনে গাজার ৬ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি শিশু স্কুল থেকে ঝরে পড়েছে। স্বাভাবিক জীবনযাপনের পরিবর্তে তারা বারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে, বিমান হামলা থেকে বাঁচতে পালিয়ে বেড়িয়েছে এবং পরিবারের জন্য খাবার ও পানীয়ের সন্ধানে দিন কাটিয়েছে।

ছবি: আল-জাজিরা
ইউনিসেফের মুখপাত্র জন ক্রিক্স জোর দিয়ে বলেছেন, শিশুদের দ্রুত ক্লাসে ফিরিয়ে আনা অত্যন্ত জরুরি। কেবল তাদের শিক্ষার জন্যই নয়, তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও এটি গুরুত্বপূর্ণ। ক্রিক্সের তথ্য অনুসারে, এ পর্যন্ত মাত্র প্রায় ১ লাখ শিশু ক্লাসে ফিরতে পেরেছে।

ছবি: আল-জাজিরা
ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য কাজ করা জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ বর্তমানে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের মাধ্যমে প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষার্থীকে শিক্ষা প্রদান করছে। তবে যুদ্ধের আগে গাজার প্রায় অর্ধেক শিশুর জন্য ইউএনআরডব্লিউএ-এর যে স্কুলগুলো ছিল, সেগুলোর বেশিরভাগই বর্তমানে বাস্তুচ্যুত মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

ছবি: আল-জাজিরা
জাতিসংঘের সংস্থাগুলো ক্ষতির পরিমাণ ও ব্যয়ের সঠিক হিসাবের চেষ্টা করছে। যুদ্ধবিরতি সবেমাত্র হওয়ায় গাজা পুনর্গঠনের কাজ এখনো শুরু হয়নি। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে বেশ কয়েক বছর সময় লাগতে পারে এবং এর আনুমানিক ব্যয় হতে পারে প্রায় ৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

ছবি: আল-জাজিরা
মানবিক সংস্থাগুলোর সচেতন উদ্যোগ ও চেষ্টা এই শিশুদের জীবনে আবার স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।
