সব অ্যাম্বুলেন্সকে রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনার দাবি মালিকদের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০:০০, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
সব অ্যাম্বুলেন্সকে রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনার দাবি মালিকদের। ছবি: সংগৃহীত
সারাদেশের চলাচলরত রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সকে অবিলম্বে বাণিজ্যিক রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন মালিকরা। মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত বিশেষ মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ অ্যাম্বুলেন্স মালিক কল্যাণ সমিতির নেতারা বলেন, বর্তমান “ভাড়ায় চালিত নয়” ক্যাটাগরির নিবন্ধন পুরো খাতকে প্রশাসনিক জটিলতা, আর্থিক ক্ষতি ও নিয়মিত হয়রানির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
সভায় বক্তব্য দেন সংগঠনের উপদেষ্টা গোলাম মোস্তফা (ফুহাদ), ডা. সুলতান মাহমুদ, ঢাকা উত্তরের সভাপতি ওমর ফারুক এবং দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. বাদল মাদবরসহ অনেকে।
মালিকদের অভিযোগ, বেসরকারি খাতে চলাচলরত প্রায় ৯ হাজার অ্যাম্বুলেন্স এখনও ভাড়ায় চালিত নয় হিসেবে নিবন্ধিত, ফলে সড়কে নেমেই পুলিশ মামলা দিচ্ছে। প্রতিটি মামলার জরিমানা দাঁড়াচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা।
২০১৯ সালে ‘মুজিব বর্ষ’-এর ঘোষণা অনুযায়ী দুই বছরের ট্যাক্স মওকুফ দেওয়া হলেও পরবর্তীতে একসঙ্গে তিন বছরের ট্যাক্স পরিশোধের বাধ্যবাধকতা আরোপ হওয়ায় দেশের প্রায় ৯৫ শতাংশ অ্যাম্বুলেন্সের কাগজপত্র নবায়ন সম্ভব হয়নি বলে দাবি করেন তারা।
নেতারা বলেন, দেশের জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর অ্যাম্বুলেন্স সেবার প্রায় শতভাগই এ সব মালিক ও কর্মীদের মাধ্যমেই পরিচালিত হয়। দুর্যোগ, দুর্ঘটনা ও করোনাকালে তারা বিনা পারিশ্রমিকে মানবিক সেবা দিয়েও এসেছে। অথচ আজও তাদের যানবাহনকে জরুরি সেবার স্বীকৃতি দিয়ে পৃথক নিবন্ধন ব্যবস্থা করা হয়নি।
এছাড়া দেশের বিভিন্ন টোল প্লাজায় অ্যাম্বুলেন্সের আলাদা শ্রেণী না থাকায় মাইক্রোবাসের টোল আদায় করা হয়। এমনকি মেট্রোপলিটন ট্রাফিক বিভাগেও অ্যাম্বুলেন্স নামে আলাদা শ্রেণী নেই—ফলে মামলা হয় যাত্রীবাহী মাইক্রোবাস হিসেবে।
সমিতির নেতারা উল্লেখ করেন, সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮-এর ধারা ৩০ (১)(ঘ) ও ৩০ (৩)-এ স্পষ্টভাবে বলা আছে—শৃঙ্খলা বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্স সেবায় ব্যবহৃত যান রুট পারমিট থেকে অব্যাহতি পাবে।
এছাড়া ধারা ৩১ (১) অনুযায়ী রুট পারমিট ছাড়া বিশেষ অনুমোদনে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ রয়েছে।
তাদের অভিযোগ, আইনের এসব ধারা বাস্তবায়ন না হওয়ায় অ্যাম্বুলেন্স মালিকরা মামলা, জরিমানা ও প্রশাসনিক জটিলতার মধ্যে পড়ছেন। ফলে খাতটি চরম ক্ষতির মুখে।
সমিতির প্রধান দুই দাবি
১️⃣ অ্যাম্বুলেন্সকে জরুরি সেবার স্বীকৃতি দিয়ে অবিলম্বে বাণিজ্যিক রেজিস্ট্রেশন চালু করতে হবে।
২️⃣ বাণিজ্যিক রেজিস্ট্রেশন না হওয়া পর্যন্ত ট্রাফিক আইনে মামলা ও জরিমানা কার্যক্রম স্থগিত রাখতে হবে।
