সাদা ঘোড়ার মিছিল, কামানের গর্জন—হোয়াইট হাউসে যুবরাজকে জমকালো অভ্যর্থনা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০১:২৩, ১৯ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ০১:২৭, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
সৌদি যুবরাজ ও ডোনাল্ড ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানকে (এমবিএস) অভ্যর্থনা জানাতে আয়োজন করলেন এক নজিরবিহীন জমকালো অনুষ্ঠান। মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে এমবিএস পৌঁছানোর পরই তাকে স্বাগত জানানো হয় কামানের গর্জন, সাদা ঘোড়ার সারিবদ্ধ কুচকাওয়াজ এবং আকাশে উড়ে যাওয়া অত্যাধুনিক এফ-৩৫ স্টেলথ ফাইটারের বহর দিয়ে—সৌদি আরবকে এসব যুদ্ধবিমান বিক্রি করতে যাচ্ছে ওয়াশিংটন।
## মহা-আয়োজনে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর উপস্থিতি
সৌদি ক্লাব আল-নাসরের পর্তুগিজ ফুটবল কিংবদন্তি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও এই ‘গালা ডে’ অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হিসেবে হোয়াইট হাউসে উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।
## অটুট রাখল জোটের বার্তা
মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ ও প্রভাবশালী মিত্র সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করা ট্রাম্পের মূল অগ্রাধিকার। তাই অভ্যর্থনার আয়োজনেও ছিল ব্যক্তিগত উষ্ণতা আর রাজনৈতিক বার্তা।
ট্রাম্প ঘোষণা করেন—সৌদি আরবকে তিনি ‘কোভেটেড’ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রি করবেন, যা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে নিরাপত্তা উদ্বেগ রয়েছে, বিশেষ করে প্রযুক্তি চুরির সম্ভাবনা নিয়ে।
এছাড়া মার্কিন–সৌদি বেসামরিক পারমাণবিক সহযোগিতা চুক্তির একটি কাঠামো সই হতে যাচ্ছে বলেও জানান প্রশাসনের এক কর্মকর্তা।
## ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ অঙ্গীকার
ট্রাম্পের প্রথম সৌদি সফরে যেমন বিনিয়োগে উদারতা দেখিয়েছিল রিয়াদ, এবারও এমবিএস নিয়ে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অবকাঠামোতে বহুবিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা।
ওভাল অফিসে বৈঠক ছাড়াও সন্ধ্যায় হোয়াইট হাউসে হবে ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের আয়োজিত গালা ডিনার।
## ইসরায়েল স্বীকৃতির চাপ
মধ্যপ্রাচ্যে নতুন শান্তি-পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সৌদি আরবকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চাপ দিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে গাজায় ২০২৩ সালের যুদ্ধের পর থেকে রিয়াদ এ বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে—ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অগ্রগতি ছাড়া কোনো আলোচনা নয়।
## খাসোগি হত্যার ছায়া
এমবিএসের এ সফর যুক্তরাষ্ট্রে তার প্রথম বড় সফর ২০১৮ সালের সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যার পর। হোয়াইট হাউস সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহী হলেও খাশোগজির স্ত্রী হানান এলাত সিএনএনকে বলেন—
“এই হত্যা আমার জীবন ধ্বংস করেছে। যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের মূল্যবোধ ভুলে গেলে চলবে না।”
## সৌদির নিরাপত্তা উদ্বেগ
ইসরায়েলের সামরিক হামলায় কাতার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর উপসাগরীয় নিরাপত্তা পরিস্থিতি নতুন মোড় নেয়। সে প্রেক্ষাপটে সৌদি আরব চাইছে- শক্তিশালী মার্কিন নিরাপত্তা নিশ্চয়তা, উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, তাদের এআই প্রকল্পের জন্য হাই-টেক চিপ সরবরাহ।
তবে বর্তমানে সৌদি–ইসরায়েল স্বীকৃতি প্রশ্নে অগ্রগতি হওয়ার সম্ভাবনা কম।
