মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

| ১৪ আশ্বিন ১৪৩২

নেত্রকোনার ঐতিহ্যবাহী ‘বালিশ’ মিষ্টি পেল জিআই স্বীকৃতি

নিজস্ব প্রতিবেদ

প্রকাশ: ২১:৪১, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ২১:৫৬, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নেত্রকোনার ঐতিহ্যবাহী ‘বালিশ’ মিষ্টি পেল জিআই স্বীকৃতি

নেত্রকোনার শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী বালিশ মিষ্টি অবশেষে দেশের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) সম্প্রতি একে বাংলাদেশের ৫৮তম জিআই পণ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই আনন্দে ভাসছে নেত্রকোনাবাসী।

‘বালিশ’ মিষ্টির উৎপত্তি প্রায় ১২০ বছর আগে নেত্রকোনা শহরের বারহাট্টা রোড এলাকায়। স্থানীয় মিষ্টান্ন প্রস্তুতকারক গয়ানাথ ঘোষ প্রথমে এই মিষ্টি তৈরি করেন। লম্বাটে, নরম ও তুলতুলে আকৃতির কারণে নাম হয় ’বালিশ’ মিষ্টি। দেশভাগের আগেই এটি কালীগঞ্জ ও নেত্রকোনা শহরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। স্বাদ, মান ও গুণে অনন্য হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকেও মানুষ ছুটে আসত গয়ানাথ ঘোষের দোকানে।

১৯৬৯ সালে গয়ানাথ ঘোষ দোকানটি কুমুদ চন্দ্র নাগের কাছে বিক্রি করেন, পরে তা যায় নিখিল মোদকের হাতে। তবে নাম থেকে যায় ‘গয়ানাথের বালিশ মিষ্টি’। আজও সেই আদি নামেই মানুষ এই মিষ্টিকে চেনে।

এই মিষ্টি তৈরিতে মূল উপকরণ হলো দুধ, চিনি ও ছানা। দুধ থেকে ছানা তৈরি করে ময়দার সঙ্গে মণ্ড বানানো হয়, তারপর তা চিনির রসে ভিজিয়ে পরিবেশনের সময় ঘন ক্ষীরের প্রলেপ দেওয়া হয়। কারিগররা জানান, মুখরোচক স্বাদ আনতে কিছু বিশেষ কৌশল প্রয়োগ করা হয়, যা তারা গোপন রাখেন।

বর্তমানে আকারভেদে ‘বালিশ’ মিষ্টির দাম ৩০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১,০০০ টাকা পর্যন্ত। একসময় এর দাম ছিল মাত্র ৫০ পয়সা। তবে সংরক্ষণ ক্ষমতা আগের চেয়ে কমে গেছে— এখন স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এক থেকে দুই দিন ভালো থাকে।

গয়ানাথ ঘোষের প্রতিষ্ঠিত দোকান ছাড়াও এখন নেত্রকোনা শহরের ‘শ্রীকৃষ্ণ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার’, ‘আলেফ খান সুইটস’, ‘খান মিষ্টান্ন ভাণ্ডার’সহ বিভিন্ন দোকানে ‘বালিশ’ মিষ্টি তৈরি হয়। তবে আদি দোকানের কদর এখনও সবচেয়ে বেশি।

সম্পর্কিত বিষয়:

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন