ঢাকার কামরাঙ্গীর চর
যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর ফাঁসির রায়
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮:০৯, ৯ অক্টোবর ২০২৫

ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে ২০১৬ সালে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যা করেছিলেন সোহেল রানা। বিচার শেষে নয় বছর পর তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিত আসামি সোহেল রানা বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।
আদালতের নির্দেশে দণ্ডিত আসামির স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে অর্থদণ্ডের টাকা ভিকটিমের পরিবারকে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। এ নির্দেশ বাস্তবায়নে ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এ মামলার প্রসিকিউটর এরশাদ আলম (জর্জ) জানান, রায়ের সঙ্গে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করা হয়েছে।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ২০১৩ সালে সোহেল রানার সঙ্গে মোছাম্মৎ সোনিয়া আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই সোনিয়া তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছ থেকে যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। মেয়ের সংসার টিকিয়ে রাখতে সোনিয়ার বাবা প্রথমে ৯০ হাজার টাকা যৌতুক দেন। কিন্তু কিছুদিন পর আবার ৫০ হাজার টাকার দাবিতে নির্যাতন শুরু হয়।
এক পর্যায়ে ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই রাত ৩টা থেকে সকাল ৮টার মধ্যে কামরাঙ্গীরচরের লোহার ব্রিজ এলাকার একটি বাসায় সোহেল রানা ও তার পরিবারের সদস্যরা বালিশ চাপা দিয়ে সোনিয়াকে হত্যা করেন।
পরদিন নিহতের বাবা মো. চান মিয়া কামরাঙ্গীরচর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৬ অক্টোবর তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন পরিদর্শক শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের। ২০১৮ সালের ৩ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। বিচার প্রক্রিয়ায় আদালত মোট ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
রায়ে আসামি সোহেল রানার মা শিউলী বেগম ও ফুফু মাজেদা বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের খালাসের আদেশ দিয়েছেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, `যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা সমাজে একটি ভয়াবহ দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে। এই অপরাধের যথাযথ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি।‘