প্রসঙ্গ: গাজায় শান্তি
মিসরে আজ বিশ্বনেতাদের বৈঠক, অনুপস্থিত ইসরায়েল ও হামাস
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩:১৯, ১৩ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ০৩:২৩, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান সংঘাত বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে আজ সোমবার (১৩ অক্টোবর) মিসরের শারম আল শেখ শহরে শুরু হচ্ছে এক গুরুত্বপূর্ণ ‘শান্তি সম্মেলন’। ধারণা করা হচ্ছে, সম্মেলনেই হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে সদ্য সম্পাদিত যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাম্প স্বাক্ষর করতে পারেন।
মিসরের পর্যটননগরী শারম আল শেখে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে যোগ দিয়েছেন বিশ্বের ২০টিরও বেশি দেশের শীর্ষ নেতা। ইতিমধ্যে সম্মেলনের ভেন্যুতে পৌঁছেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। বৈঠকে সহ-সভাপতিত্ব করছেন মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ, এবং ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। এছাড়া জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও অংশ নিতে পারেন বলে জানা গেছে।
তবে সম্মেলনে ইসরায়েল সরকারের কোনো প্রতিনিধি থাকছেন না, বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মুখপাত্র শোশ বেদরোসিয়ান।
অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি সূত্র জানিয়েছে, গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনায় থাকা হামাসের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ইতিমধ্যেই মিসর ছেড়ে গেছেন। প্রতিনিধি দলের প্রধান খলিল আল–হায়াসহ বেশির ভাগ সদস্য গত শনিবার শারম আল শেখ ত্যাগ করেন। ফলে আজকের বৈঠকে হামাসের কেউ উপস্থিত থাকছেন না।
বিশ্ব পর্যবেক্ষকদের মতে, এই সম্মেলন মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় এক ‘গুরুত্বপূর্ণ মোড়’। তবে এতে ইসরায়েল ও হামাসের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ না থাকায় আলোচনার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে।
মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র সম্মেলনটির আয়োজন করছে। মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্মেলনে সহ-সভাপতিত্ব করবেন।
এই সম্মেলনের উদ্দেশ্য- গাজায় চলমান সংঘাত বন্ধ করা, যুদ্ধবিরতির চুক্তি বাস্তবায়ন করা, মানবিক সহায়তা প্রবাহ সুনিশ্চিত করা এবং গাজার পুনর্গঠন ও ভবিষ্যৎ ব্যবস্থাপনার রূপরেখা নির্ধারণ করা।
এর আগে ইসরায়েল ও হামাস গত ৯ অক্টোবর একটি গাজা শান্তি পরিকল্পনায় সম্মত হয়। সেই প্রেক্ষিতে এই শান্তি সম্মেলনে বসছেন বিশ্ব নেতারা। এতে ২০ টিরও বেশি দেশের শীর্ষনেতা ও আন্তর্জাতিক সংস্থা অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
নিশ্চিত অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে রয়েছেন- যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
তবে এই বিশ্ব শান্তি সম্মেলনে ইসরায়েল ও হামাস অংশগ্রহণ করছে না। অন্যদিকে, ইরানের প্রেসিডেন্ট অংশগ্রহণের নিমন্ত্রণ পেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি সম্মেলনে আসছেন না।
সম্মেলন শুরু হবে আল-সিসি ও ট্রাম্পের বৈঠক ও বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। প্রধান অধিবেশনে রয়েছে অংশগ্রহণকারীদের অভিভাষণ, মিডিয়া বিবৃতি, গ্রুপ ফটো ও সম্মেলনের মূল আলোচনা। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে আলাদা আলোচনা ও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েল ও হামাসের অনুপস্থিতিতে আলোচনার পরিধি সীমিত হতে পারে। যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন ও পুনর্গঠন–দুইটিই বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিতে পারে।
তবে এই সম্মেলনকে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে ‘নতুন কূটনৈতিক সূচনা’ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন, ইউরোপীয় নেতাদের ঐক্যবদ্ধ উপস্থিতি এবং জাতিসংঘের সম্পৃক্ততা এই আলোচনাকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।
অবশ্য সংঘাতের দুই প্রধান পক্ষ যদি আলোচনায় সরাসরি অংশ না নেয়, তাহলে চুক্তির কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে— এমন আশঙ্কাও রয়েছে কূটনৈতিক মহলে।