পাকিস্তানের দাবি
আফগানিস্তানের ২০০ জনের বেশি সেনা ও যোদ্ধা নিহত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮:৩৩, ১২ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২০:০২, ১২ অক্টোবর ২০২৫

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তে ভয়াবহ সংঘর্ষে উত্তেজনা চরমে উঠেছে। দেশটির সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তাদের পাল্টা হামলায় আফগান তালেবানের দুই শতাধিক সৈন্য ও যোদ্ধা নিহত হয়েছে। তবে সংঘর্ষে পাকিস্তানেরও কমপক্ষে ২৩ সেনা নিহত ও ২৯ জন আহত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।
শনিবার রাতভর সীমান্তে এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর রবিবার (১২ অক্টোবর) পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মিডিয়া উইং জানায়, আফগান বাহিনীর হামলার জবাবে ব্যাপক পাল্টা অভিযান চালানো হয়। পাক সেনাদের দাবি, ‘‘বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী তালেবান ও অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠীর অন্তত ২০০ জনের বেশি সদস্য নিহত হয়েছে।’’
অন্যদিকে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ দাবি করেছেন, তাদের হামলায় ৫৮ পাকিস্তানি সেনা নিহত এবং নিজেদের ৯ সেনা প্রাণ হারিয়েছে।
পাক সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, সংঘর্ষের সময় তালেবান বাহিনীর অবকাঠামো, সেনা পোস্ট, ক্যাম্প, হেডকোয়ার্টার এবং সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে। ‘‘আমাদের লক্ষ্য ছিল সীমান্ত ও কৌশলগত অঞ্চলগুলোতে সন্ত্রাসী হুমকি দমন করা,’’ বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
এই সংঘর্ষে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সৌদি আরব ও কাতার। রিয়াদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘‘পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তে চলমান সংঘর্ষে আমরা গভীর উদ্বেগে আছি। উভয় পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান জানাচ্ছি।’’
সৌদি আরব আরও জানিয়েছে, তারা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার যেকোনো প্রচেষ্টাকে সমর্থন করবে। “ভ্রাতৃপ্রতীম আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের নিরাপত্তা এমন পথে অগ্রসর হোক যা শান্তি নিশ্চিত করে,” বিবৃতিতে বলা হয়।
কাতারও এক বিবৃতিতে উভয় দেশকে আলোচনার পথে ফিরতে ও কূটনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে। দেশটি জানিয়েছে, আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে তারা প্রয়োজনে মধ্যস্থতার ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সংঘর্ষ দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে নতুন অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে পারে। আফগান-পাক সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরে চলমান সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযানের মধ্যেও এ ধরনের বড় সংঘর্ষ উভয় দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলবে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্র: আল জাজিরা