ট্রাইব্যুনালে অডিও রেকর্ড উপস্থাপন
শেখ হাসিনার নির্দেশ: ‘এবার শুরুতেই দিবা’
প্রকাশ: ১৯:০৭, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি ফোনালাপ উপস্থাপন করা হয়েছে। সেখানে তাকে জুলাই–আগস্ট আন্দোলনে ছাত্র–জনতার ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিতে শোনা গেছে।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১–এর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম রাষ্ট্রপক্ষের দ্বিতীয় দিনের যুক্তিতর্কে এই অডিও রেকর্ডটি শোনান।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার এর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল মামলাটি শুনছেন।
এই মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালএবং আরও একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তা।
প্রসিকিউশন প্রথমে জুলাই–আগস্টের আন্দোলন নিয়ে তৈরি একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করে। সেখানে আন্দোলন দমন অভিযান, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা এবং আইন–শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা তুলে ধরা হয়।
এরপর শেখ হাসিনার কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড উপস্থাপন করা হয় ও সেটি শোনানো হয়। অডিওতে কল ধরার সঙ্গে সঙ্গেই অপর প্রান্ত থেকে সালাম দেওয়া হয় ‘স্যার’ সম্বোধনে। তখন শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়- “ওরা কিন্তু জায়গায় জায়গায় এখন জমায়েত হতে শুরু করেছে। মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি—বিভিন্ন জায়গায়। শুরুতেই কিন্তু ইয়ে... করতে হবে, একদম শুরুতেই। ধাওয়া দিলে এরা গলিতে গলিতে থাকবে। এবার আর কোনো কথা নাই। এবার শুরুতেই দিবা।”
চিফ প্রসিকিউটর জানান, শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলছিলেন কর্নেল রাজিব, যিনি তখন প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি মিলিটারি সেক্রেটারি ছিলেন।
প্রসিকিউশন দাবি করে, এই কথোপকথনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা “গুলি চালানোর সরাসরি নির্দেশ” দিয়েছিলেন।
এসময় চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, “২৯ জুলাই ২০২৪ সালে শেখ হাসিনা ফোনে কর্নেল রাজিবকে এই নির্দেশ দেন। ‘এবার শুরুতেই দিবা’ মানে হলো জনসমাগম ঘটলেই গুলি করার নির্দেশ। এটাই ছিল সরকারের কৌশল।”
তিনি আরও যোগ করেন, এই অডিও এবং ভিডিও প্রমাণগুলো মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে গণ্য হবে।