দ্য তাজ স্টোরি:
পরেশ রাওয়ালও বাঁচাতে পারেনি ইতিহাস বিকৃতির এই সিনেমা
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯:০৮, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
 
						
									তাজমহলের ইতিহাস নিয়ে বারবার বিতর্ক হয়েছে—এ সিনেমা সেই পুরোনো বিতর্ককেই টেনে এনেছে আদালতঘরে। তুষার অমরিশ গোয়েল পরিচালিত ‘দ্য তাজ স্টোরি’ ৩ ঘণ্টার এক প্রলম্বিত আদালত নাটক, যেখানে পরেশ রাওয়াল এক গাইডের ভূমিকায় তাজমহলের উৎপত্তি নিয়ে ‘সত্য’ উদঘাটনের লড়াইয়ে নামেন। এনটিডিভিতে এই ছবির রিভিওতে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
কিন্তু সিনেমাটি যতটা মহৎ হতে চেয়েছিল, তার ফলাফল ততটাই ক্লান্তিকর ও বিভ্রান্তিকর। অসংলগ্ন চিত্রনাট্য, অতিনাটকীয় সংলাপ আর বিক্ষিপ্ত গতি—সব মিলিয়ে ‘দ্য তাজ স্টোরি’ দেখতে গিয়ে দর্শকের ধৈর্যের পরীক্ষা হয়ে যায়।
গল্পের কাঠামো: আদালতের নাটক নাকি রাজনৈতিক প্রচারণা?
গল্প শুরু হয় ১৯৫৯ সালে—এক তরুণ প্রত্নতত্ত্ববিদ তাজমহলের বেসমেন্টে কিছু ‘অজানা’ জিনিস দেখতে পান। এরপর সময় লাফিয়ে পৌঁছে যায় ২০২৩ সালে, যেখানে অভিজ্ঞ গাইড বিষ্ণু দাস (পরেশ রাওয়াল) হঠাৎই দাবি করেন—তাজমহল আসলে এক প্রাচীন হিন্দু মন্দির!
এই দাবির পক্ষে প্রমাণ চেয়ে তিনি আদালতে যান, প্রতিপক্ষ আইনজীবী আনোয়ার রশিদ (জাকির হুসেন)-এর সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হন। আদালতঘর ভর্তি দর্শক, হাসি-ঠাট্টা আর উত্তেজনাপূর্ণ সংলাপ—সবই যেন একটি ‘মিডল স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতা’র মতোই সাজানো।
অভিনয় ও নির্মাণ: পরেশ রাওয়ালের পারফরম্যান্সেও উদ্ধার সম্ভব নয়
পরেশ রাওয়াল তার অভিজ্ঞতায় গল্পটিকে টেনে তোলার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু দুর্বল লেখনী ও অগোছালো সম্পাদনা তার সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ করেছে। জাকির হুসেন ও অনিল জর্জও চেষ্টা করেছেন, কিন্তু চিত্রনাট্যের রাজনৈতিক তাচ্ছিল্য ও ইতিহাস বিকৃতির ছাপ তাদের পারফরম্যান্স ঢেকে ফেলেছে।
সিনেমাটিক ব্যর্থতা: কল্পনা, তথ্য ও যুক্তির মিশ্র গোলমাল
‘দ্য তাজ স্টোরি’ একদিকে আবার ঐক্যের কথা বলে, অন্যদিকে বিভাজনের সুরে ভেসে যায়। ইতিহাসবিদ, প্রত্নতত্ত্ববিদ ও শিক্ষাবিদদের নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক উপস্থাপনাকে সিনেমাটি ‘সাহসী সত্য’ বলে চালাতে চেয়েছে—যা শেষ পর্যন্ত হাস্যকর লেগেছে।
চলচ্চিত্রে যেসব ‘তথ্য’ ও বই তুলে ধরা হয়েছে, তা আসল না নকল—এই প্রশ্নই দর্শকের মনে ঘুরতে থাকে। ফলে সিনেমাটি তথ্যভিত্তিক বিতর্ক নয়, বরং বিকৃত কল্পনার এক প্রলম্বিত নাটক হয়ে দাঁড়ায়।
চূড়ান্ত রায়: ছড়ানো পাশা, হারা বাজি
‘দ্য তাজ স্টোরি’ মূলত এক বিশৃঙ্খল প্রচেষ্টা, যা ইতিহাসের প্রশ্নকে সিনেমার আড়ালে রাজনৈতিক স্লোগানে পরিণত করেছে। পরেশ রাওয়ালের মতো অভিনেতাও এই ভাঙা গল্পকে উদ্ধার করতে পারেননি।
 

 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													 
													