ওমরাহর ফজিলত ও কবুল হওয়ার শর্ত
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯:১৬, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
এমন কিছু ইবাদত আছে, যা আত্মাকে শুদ্ধ করে, অন্তরকে কোমল করে এবং আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার অসাধারণ সুযোগ এনে দেয়। ওমরাহ তেমনই এক ইবাদত। এটি এক আত্মিক যাত্রা, যেখানে মানুষ নিজের গুনাহ থেকে মুক্তির আশায় আল্লাহর রহমতের ছায়ায় নিজেকে সমর্পণ করে। হজের তুলনায় ওমরাহ সহজ হলেও এর মাহাত্ম্য ও ফজিলত অপরিসীম। সারা বছর বিশ্বের লাখো মুসলমান কাবার পানে যাত্রা করেন এই পবিত্র ইবাদত পালনের উদ্দেশে। বাংলাদেশের অসংখ্য মুসলিমও সেই সৌভাগ্য অর্জন করেন। তাই ওমরাহর ফজিলত, কবুল হওয়ার শর্ত ও বিধানাবলি জানা জরুরি।
ওমরাহর ফজিলত : ওমরাহ পালনের অসংখ্য ফজিলতের কথা হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। নবী কারিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘এক ওমরাহর পর আরেক ওমরাহ, উভয়টির মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহের কাফফারা। আর জান্নাতই মাবরুর হজের একমাত্র প্রতিদান।’ (সহিহ মুসলিম ১৩৪৯)
ওমরাহ কবুল হওয়ার শর্ত : ওমরাহ একটি ইবাদত। তাই অন্যান্য ইবাদতের মতো এটিও ইখলাস ও নবী কারিম (সা.)-এর অনুসরণ ছাড়া আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না। ওমরাহতে ইখলাসের মর্ম হলো, শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালীন সাফল্যের উদ্দেশে ওমরাহ সম্পাদন করা, কোনো ধরনের পার্থিব উদ্দেশ্য এখানে গ্রহণযোগ্য নয়, বিশেষ করে প্রচারপ্রিয়তা ইবাদতের সওয়াব নষ্ট করে দেয়। আর নবী কারিম (সা.)-এর অনুসরণের মর্ম হলো, তিনি যেভাবে ওমরাহ পালন করেছেন, সাহাবিদের শিখিয়েছেন এবং সম্মতি দিয়েছেন, সেভাবেই তা পালন করা।
ওমরাহর বিধান : ওমরাহ ওয়াজিব না সুন্নত তা নিয়ে ফিকহের ইমামদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল ও ইমাম শাফেয়ি (রহ.)-এর মতে, ওমরাহ ওয়াজিব। পক্ষান্তরে ইমাম মালিক ও আবু হানিফা (রহ.) বলেছেন, ওমরাহ পালন করা সুন্নত। কারণ হজরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, নবী কারিম (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘ওমরাহ কি ওয়াজিব?’ তিনি বলেছেন, ‘না, ওমরাহ করা তোমার জন্য উত্তম।’ (সুনানে দারাকুতনি ২৭২৪)
হজ যেমন জীবনে একবার আদায় করা ফরজ, তেমনি ওমরাহও জীবনে অন্তত একবার আদায় করা সুন্নত। সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য একাধিক ওমরাহ করতে অসুবিধা নেই। তবে হজ ফরজ থাকা অবস্থায় হজ বাদ দিয়ে বারবার ওমরাহ করা অনুচিত। অবশ্য ওমরাহ আদায় করলে হজ ফরজ হয়ে যায়, এ কথা সঠিক নয়। কারণ হজ ও ওমরাহর খরচে অনেক পার্থক্য বিদ্যমান। আর হজের সফরে যেমন ওমরাহ করা যায়, আলাদাভাবেও করা যায়। নারীদের জন্য মাহরাম পুরুষ সঙ্গে থাকার শর্ত রয়েছে।
