অস্ট্রেলিয়ায় কোরআন চর্চার নতুন দিগন্ত
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭:১১, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
অস্ট্রেলিয়ায় জাতীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা মুসলিমদের মধ্যে কোরআন চর্চা ও ইসলামি মূল্যবোধের বিকাশে অনন্য ভূমিকা রাখছে। এবারের প্রতিযোগিতায় বিচার প্রক্রিয়ার মানোন্নয়ন, প্রযুক্তির ব্যবহার এবং নারী প্রতিযোগী অংশগ্রহণের বিষয়টি আয়োজনটিকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। এতে অস্ট্রেলিয়ায় কোরআন চর্চার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে।
‘হাফিজ আল-কোরআন কমপিটিশন’ নামে পরিচিত এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ক্যানবেরার গুনগাহলিন মসজিদভিত্তিক কোরআন মেমোরাইজেশন স্কুল।
দুই বছর আগে প্রথমবার শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতা এখন অস্ট্রেলিয়ায় কোরআনপ্রেমী মানুষদের বিশেষ মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। এতে কোরআন মুখস্থ করা, তেলাওয়াতের শুদ্ধতা এবং তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ইসলামি চেতনা জাগ্রত করার লক্ষ্য একত্রে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
প্রতিযোগিতা সম্পর্কে আয়োজক আশহাদ আল-সুলহি অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম এসবিএস-কে বলেন, ‘এটি আগে শুধুমাত্র ক্যানবেরায় আয়োজিত হতো। এবার প্রথমবারের মতো আমরা জাতীয় পর্যায়ে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর মাধ্যমে সারাদেশের কোরআন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে একত্র করে পারস্পরিক সহযোগিতার বন্ধন দৃঢ় করা সম্ভব হয়েছে।’
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত কোরআন বিচারক মুহাম্মদ ফুয়াদ আবদুল মজিদ এবং শায়খ আল-মিসরাওয়ির মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলেমদের উপস্থিতি বিচার ব্যবস্থার মানকে বৈশ্বিক মাত্রায় উন্নীত করেছে।
আল-সুলহি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল বিচার প্রক্রিয়াকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা। এজন্য প্রশ্ন নির্ধারণ ও মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কঠোর মানদণ্ড তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থার সহায়তায় মানবিক ভুল কমিয়ে মূল্যায়নের স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হয়েছে।’
তিনি জানান, প্রযুক্তি টিমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও তথ্যপ্রযুক্তির বিশেষজ্ঞরা কাজ করেছেন। তাদের প্রচেষ্টায় প্রতিযোগিতার মান ও নির্ভুলতা বহুগুণে বেড়েছে।
এবারের প্রতিযোগিতায় নারী অংশগ্রহণের হার প্রায় ৪৫ শতাংশে পৌঁছেছে, যা কোরআন শিক্ষায় নারীদের ক্রমবর্ধমান আগ্রহ ও অগ্রগতির ইতিবাচক ইঙ্গিত বহন করে।
অস্ট্রেলিয়ার হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা এখন কেবল একটি অনুষ্ঠান নয়, বরং এটি কোরআনপ্রেমী প্রজন্ম গঠনের জাতীয় প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এই প্রতিযোগিতা অস্ট্রেলিয়ার মুসলিম সমাজে কোরআনের ভাষা, সৌন্দর্য ও নৈতিকতার প্রতি গভীর অনুরাগ সৃষ্টি করছে।
