মালালার নতুন আত্মজীবনী
প্রেম, জীবন ও নিজের পথের গল্প
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩:৩২, ২৩ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৪:১৪, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী মালালা ইউসুফজাইয়ের নতুন আত্মজীবনী বই “ফাইন্ডিং মাই ওয়ে”।ছবি: সংগৃহীত
নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী মালালা ইউসুফজাই তার নতুন আত্মজীবনী “ফাইন্ডিং মাই ওয়ে” তেএ নিজের ব্যক্তিগত জীবন ও মানসিক বিকাশ নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন।
২৮ বছর বয়সী এই শিক্ষা অধিকারকর্মী এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, বইটির খোলামেলা বিষয়বস্তু নিয়ে তার বাবা-মায়ের কিছু আপত্তি ছিল—বিশেষত মায়ের, কারণ বইটিতে তিনি অনেক ব্যক্তিগত বিষয় প্রকাশ করেছেন।
মালালা বলেন,“আমি জানতাম, আমি যা লিখেছি তা নিয়ে আমার বাবা-মায়ের অনেক মতামত থাকবে—বিশেষ করে মা হয়তো রাগ করবেন। কিন্তু আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, বইটি যেন সত্যিই আমার অনুভূতি ও ভাবনাগুলো প্রতিফলিত করে।”
বইটিতে মূলত তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময়ের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন—যেখানে তিনি মেয়েদের শিক্ষার পক্ষে তার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সাধারণ জীবনের স্বাভাবিকতা খুঁজে পেতে চেয়েছিলেন। এতে রয়েছে পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার নিয়ে তার সংগ্রামের কথাও।
তিনি আরও লিখেছেন স্বামী আসার মালিকের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে। যাকে তিনি ২০২১ সালে বিয়ে করেন। মালালার ভাষায়, এই বই তার জীবনের নতুন এক অধ্যায়, যেখানে তিনি আর শুধু “বিশ্ব প্রতীকের” ভূমিকা নয়, বরং নিজের মতো করে জীবন সংজ্ঞায়িত করতে চাওয়া এক নারীর পরিচয় তুলে ধরেছেন।
বইয়ের এক অধ্যায়ে তিনি স্মরণ করেছেন ২০২১ সালের ব্রিটিশ ভোগ-এর সাক্ষাৎকারের বিতর্ক, যেখানে বিয়ের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তার মন্তব্য পাকিস্তানে ও পরিবারে সমালোচনার ঝড় তোলে। মালালা জানিয়েছেন, তখন তিনি আসারের সঙ্গে গোপনে সম্পর্কে ছিলেন এবং প্রশ্নটির উত্তরে দ্বিধায় পড়েছিলেন—ফলে তার বক্তব্য ভুলভাবে “বিবাহ বিরোধী” হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়।
তিনি বইয়ে লিখেছেন তাদের গোপন সম্পর্কের ছোট ছোট গল্প—যেমন এক ডিনার ডেটে শালওয়ার কামিজ খুলে মাঝরাতে গোলাপি পোশাক ও হাই-হিল পরে নেওয়া, কিংবা হাতে হাত রেখে হাঁটার সময় ফটোগ্রাফারদের এড়াতে গাছের আড়ালে লুকিয়ে পড়া।
আরেক জায়গায় তিনি বলেছেন, অক্সফোর্ডে জিন্স পরায় তাকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল—কীভাবে তার প্রতিটি ছোট সিদ্ধান্তকেও অনেকে নজরে রাখতেন।
বইটির শেষ অধ্যায়ে মালালা বর্ণনা করেছেন পাকিস্তানের শাংলা জেলায় তার সাম্প্রতিক সফরের অভিজ্ঞতা, যেখানে তিনি একটি মেয়েদের স্কুল উদ্বোধন করেন—যেখানে মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তাও দেওয়া হয়। তিনি পিপল ম্যাগাজিনকে বলেন,“মেয়েদের শিক্ষার জন্য আমি যা করছি, সেটিই আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ।”