ইতিহাস গড়লেন তাকাইচি: জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১১:৫৯, ২১ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১২:০৭, ২১ অক্টোবর ২০২৫

জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী তাকাইচি। ছবি: সংগৃহীত
জাপানের রাজনীতিতে এক ঐতিহাসিক পরিবর্তনের সূচনা হলো। পার্লামেন্টে ভোটাভুটির মাধ্যমে সানায়ে তাকাইচি দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়লেন। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এই ভোটে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)-এর সভাপতি তাকাইচি সহজ ব্যবধানে জয়ী হন, যা জাপানের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
জাপান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, নিম্নকক্ষে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তাকাইচি ২৩৭ ভোট পেয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (সিডিপি)-এর নেতা ইয়োশিহিকো নোডা পান ১৪৯ ভোট। ফল ঘোষণার পর পার্লামেন্টজুড়ে করতালির ধ্বনি ও অভিনন্দনে মুখর হয়ে ওঠে পুরো সভাকক্ষ।
সোমবার এলডিপি ও জাপান ইনোভেশন পার্টি (জেআইপি)-এর মধ্যে হওয়া জোট তাকাইচির বিজয় প্রায় নিশ্চিত করেছিল। এই জোট বিরোধী দলের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা কার্যত রুখে দিয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
নতুন মন্ত্রিসভা ও নারীর নেতৃত্ব
প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার আগেই তাকাইচি নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের কাজ শুরু করেন। জানা গেছে, জেআইপি থেকে কোনো সদস্য নতুন সরকারে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন না। তবে এলডিপি-র অভিজ্ঞ ও তরুণ নেতৃত্বকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
পূর্ববর্তী মন্ত্রিসভা থেকে মুখপাত্র ইয়োশিমাসা হায়াশি ও কৃষিমন্ত্রী শিনজিরো কোইজুমি ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তারা তাকাইচির নতুন সরকারেও গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পারেন। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী তোশিমিৎসু মোতেগির নামও আলোচনায় রয়েছে।
দলীয় প্রচারে তাকাইচি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন— তার সরকারে নারীদের সম্পৃক্ততা বাড়ানো হবে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, জাপানের ইতিহাসে এবারই প্রথম মন্ত্রিসভায় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারী মন্ত্রী দেখা যাবে।
অভিজ্ঞ রাজনীতিক থেকে ইতিহাসের পাতায়
দীর্ঘ ৩০ বছরের সংসদীয় অভিজ্ঞতা নিয়ে সানায়ে তাকাইচি জাপানের রাজনীতিতে পরিচিত মুখ। তিনি অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। চলতি মাসের শুরুতে এলডিপি সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লড়াইয়ে অংশ নিয়ে অবশেষে ইতিহাস গড়লেন তিনি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তাকাইচির নেতৃত্বে জাপান নতুনভাবে নারী নেতৃত্বের যুগে প্রবেশ করছে। তার এই সাফল্য শুধু জাপানের নয়, বিশ্বজুড়ে নারী নেতৃত্বে আগ্রহী তরুণদের জন্য এক অনুপ্রেরণার বার্তা।