বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

| ৮ কার্তিক ১৪৩২

মানবতাবিরোধী অপরাধ 

শেখ হাসিনার মামলার রায় কবে জানা যাবে ১৩ নভেম্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪:০৭, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

শেখ হাসিনার মামলার রায় কবে জানা যাবে ১৩ নভেম্বর

২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামীর বিচারকাজ শেষ হয়েছে। এই মামলার রায় কবে হবে, তা জানা যাবে ১৩ নভেম্বর। 

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর সোয়া ১২টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই তারিখ ঘোষণা করেন।
 
এদিন মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে যুক্তি খণ্ডন শেষে সমাপনী বক্তব্য রাখেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
 
এসময় অ্যার্টনি জেনারেল বলেন, এ হত্যাযজ্ঞ হয়েছে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়। শেখ হাসিনাসহ আসামিদের শাস্তি না হলে শহীদ আহতরা অবিচারের শিকার হবে।
 
এই মামলার অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। এর মধ্যে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন নিজের দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন।

প্রসিকিউশন মনে করে, রাজসাক্ষী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের জবানবন্দিতে ‘ট্রু অ্যান্ড ফুল ডিসক্লোজার’ (সত্য ও পূর্ণ প্রকাশ) হয়েছে।

এ মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল কোনো আইনজীবী নিয়োগ না করায় ট্রাইব্যুনাল তাদের পক্ষে আমির হোসেনকে আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেয়।

এর আগে বুধবার এই মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হয়। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে হাসিনা-কামালের খালাসের প্রত্যাশা করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত নিযুক্ত আইনজীবী। দায় থেকে বাঁচতেই সাবেক আইজিপি মামুন রাজসাক্ষী হয়েছেন বলেও দাবি তার।
 
ট্রাইব্যুনালের তথ্য অনুযায়ি, গত ৩ আগস্ট জুলাই-আগস্টের হত্যাযজ্ঞের মামলায় তিন আসামী শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিচার শুরু হয়। এরপর ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ সাক্ষীর জবানবন্দি এবং ৬ কার্যদিবস যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে প্রসিকিউশন। শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে তিন দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়, যা শেষ হয় বুধবার (২২ অক্টোবর)।
 
ওইদিন যুক্তিতর্কে সাবেক আইজিপি মামুনের রাজসাক্ষী হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। তিনি বলেন, দায় থেকে বাঁচতেই এ পথ বেছে নিয়েছেন তিনি।

আন্দোলন দমনে শেখ হাসিনা মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেননি। হাসিনা-কামালের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে পারেনি বলেও দাবি করেন এই আইনজীবী।
 
অপরাধ প্রমাণিত হয়নি দাবি করে হাসিনা কামালের খালাস চেয়েছেন তিনি।
 
এছাড়াও যুক্তিতর্কে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন জানান চিফ প্রসিকিউটর। একই সঙ্গে আসামিদের সম্পত্তি বিক্রি করে শহীদ ও আহতদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার আবেদন করা হয়। আর রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের কোন সাজার আবেদন করেনি প্রসিকিউশন।
 
শেখ হাসিনার এ মামলায় ৮৪ জনকে সাক্ষী করা হলেও ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিয়েছেন ৫৪ জন। তাদের সবাইকেই জেরা করেছেন আমির হোসেন।
 
গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। 

এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার ও শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার। সাক্ষী করা হয়েছে ৮১ জনকে।
গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এ মামলার প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
 

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন